অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি খুলনা আর্ট একাডেমির শিশু শিক্ষার্থী নাবিহার মা সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেছেন।
নাবিহা খুলনা আর্ট একাডেমিতে ২০২৩ সালে ২০ জানুয়ারিতে ভর্তি হয়েছিল।সোফিয়া রাসেল নাবিহা, পিতাঃ শেখ নোমান রাসেল, মাতাঃ নিপা রহমান।পিতা ব্যাংকে জব করেন মা সদ্য প্রাইমারির শিক্ষিকা হয়েছিলেন।তার কর্মস্থান বাগেরহাট।কিন্তু খুলনাতে তাদের বাসা প্রতিদিন সকাল হলে বাসা থেকে ৩ জনে খাওয়া-দাওয়া করে রেডি হয়ে যার যার গন্তব্য স্থানে রওনা দিতেন।আবার সন্ধ্যা হলে সবাই বাসায় ফিরে আসতেন। তিনজনার খুব আনন্দের একটি সংসার ছিল।
খুলনা আর্ট একাডেমিতে ড্রয়িং ব্যাচে ভর্তি করাতে এসে নাবিহার মামনি খুলনা আর্ট একাডেমির পরিচালকের কাছে মনের কথা ব্যক্ত করেন।আর্ট হলো সৃজনশীল বিষয়।তাই আপনি আপনার শিক্ষার্থীকে শুধুমাত্র স্কুলের শিক্ষা দিবেন না তাকে আপনার বেসিক ধারণা দিয়ে তার মেধা অনুযায়ী তাকে শিক্ষা দিবেন।
এরকম কথা সব অভিভাবকদের কাছ থেকে পাওয়া যায় না।সবাই মার্কের জন্য ড্রইং শিখতে আসে।তাই চিত্রশিল্পী মিলন বিশ্বাস একজন জ্ঞানী মাতা হিসেবে তাকে আখ্যায়িত করেন।
প্রতি সপ্তাহে শুক্রবার ও শনিবার ক্লাসে আসে নাবিহা। প্রতিষ্ঠানের সবাই নাবিহাকে অত্যন্ত ভালবাসে কারণ সুস্পষ্ট কথা বলে।বয়স অনুপাতে তার চিন্তা-ভাবনা অন্যদের চেয়ে একটু ব্যতিক্রম।তাই তার ক্লাসের সবার সঙ্গে সুন্দর একটা সম্পর্ক রয়েছে।
নাবিহার সহপাঠী তথাপি ও তার মা ক্লাসে এসে বিষয়টি আমাদের জানায়।গত ৯সেপ্টেম্বর সোমবার আনুমানিক সকাল ৯ ঘটিকায় বাগেরহাট সড়কে ইজিবাইকে স্কুলে যাচ্ছিলেন শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রদান করার জন্য।কিন্তু নির্মম ভাগ্যের নির্মম পরিহাস তাকে স্কুলে পৌঁছাতে দেয়নি।একটি পিকআপ বেপরোয়া গতিতে ইজিবাইক কে ধাক্কা দিলে ইজিবাইকে থাকা চারজন যাত্রী ঘটনা স্থলেই মৃত্যুবরণ করেন।
এমন দুঃসংবাদ শোনার পরে চিত্রশিল্পী মিলন বিশ্বাস অত্যন্ত ব্যথিত।কারণ পূর্বেও তার তিনজন শিক্ষার্থীকে সড়ক দুর্ঘটনায় কেড়ে নিয়েছে এবারে হারালেন প্রতিষ্ঠানের একজন অভিভাবককে।মিলন বিশ্বাস অত্যন্ত ভেঙে পড়েছেন শিক্ষার্থী নাবিহার কথা ভেবে।মাত্র চতুর্থ শ্রেণী পড়ুয়া শিক্ষার্থী কিভাবে তার মাকে ছাড়া থাকবে।হাস্য উজ্জ্বল চেহারা যে কিনা প্রতিটা মুহূর্ত মাকে অনুসরণ করে ভর্তির পর থেকে দেখে আসছে।সেই শিক্ষার্থী মা ছাড়া কিভাবে তার জীবনের বাকিটা দিনগুলো অতিবাহিত করবে এনম ভাবনায় তিনি অত্যন্ত ব্যথিত হয়ে স্রষ্টার কাছে নাবিহার জন্য প্রার্থনা করছেন তিনি যেন এই শোক সইবার শক্তি দেন এই শিশুর মাঝে।
এরকম ঘটনা আমাদের প্রতিনিয়তই পত্র-পত্রিকায় দেখতে হয়। যে দেশের একজন মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলে কিঞ্চিত মাত্র জরিমানার মাধ্যমে ঘাতকরা মুক্তি পায় সেই দেশে সড়ক দুর্ঘটনা চলমান থাকবে এটাই স্বাভাবিক।একটি পশু সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালে যে অর্থ দন্ডিত করা হয়, মানুষের বেলায় তার অর্ধেক ও দেওয়া হয় না।সেখানে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করা সম্ভব না।
বর্তমানে যারা দেশ পরিচালনা করছেন সবকিছু পরিবর্তন করার উদ্যোগ নিয়েছেন তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন তারা যেন এ ধরনের বিষয়টি একটু বিবেচনা করে কিছু নীতিমালা পরিবর্তন করে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করার বদ্ধপরিকর গ্রহণ করেন।তা না হলে এরকম হাজারো শিশু পিতা-মাতাকে হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়বেন।খুলনা আর্ট একাডেমির পরিবার খুবই ব্যথিত ।
খুলনা আর্ট একাডেমির সদস্যরা যে যেখানে আছেন সবাই নাবিহার জন্য শুভকামনা করবেন সে যেন এই শোক কাটিয়ে তার বাবাকে নিয়ে মায়ের আদর্শ এবং স্বপ্ন নিয়ে বড় হতে পারেন।এমন প্রত্যাশায়
চিত্রশিল্পী মিলন বিশ্বাস
প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক
খুলনা আর্ট একাডেমি।