রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:১৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
ঢাকা মাতাতে আসছে পাকিস্তানের বিখ্যাত ব্যান্ড ‘জাল’ রাজশাহীতে গণপিটুনিতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নিহত সারিয়াকান্দিতে পৌর মৎস্যজীবী দলের পূর্নাঙ্গ কমিটিতে সভাপতি কাঞ্চন, সম্পাদক ঘেরু পর্তুগাল বিএনপির নেতাদের সাথে রাষ্ট্রদূত রেজিনা আহমেদের সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় সারিয়াকান্দিতে পৌর ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে মতবিনিময় সভা সারিয়াকান্দিতে পৌর ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে মতবিনিময় সভা মান্দায় বিএনপির মতবিনিময় ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত আরএমপির দায়িত্ব নিলেন নতুন কমিশনার আবু সুফিয়ান গোদাগাড়ী ও তানোর উপজেলা বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন রাজশাহীতে সমবেত কন্ঠে জাতীয় সংগীত গাইলো উদীচী
নোটিশ :
দেশের জনপ্রিয় সর্বাধুনিক নিয়ম-নীতি অনুসরণকৃত রাজশাহী কর্তৃক প্রকাশিত নতুনধারার অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘যমুনা প্রতিদিন ডট কম’

সাত মাসেই পাঁচশ কোটি টাকার মালিক এমপি কালাম

রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সাবেক সংসদ-সদস্য (এমপি) আবুল কালাম আজাদ।সংসদ-সদস্য হিসাবে তার মেয়াদ ছিল মাত্র সাত মাস।এর আগে তিনি তিনবার তাহেরপুর পৌরসভার মেয়রের দায়িত্বে ছিলেন।সংসদ-সদস্য ও মেয়র হিসাবে এক যুগ জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব পালনকালে বাগমারায় কায়েম করেন ত্রাসের রাজত্ব।সশস্ত্র গ্যাংয়ের নেতৃত্বে ছিলেন তিনি, ছিলেন পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী।একাধিকবার অস্ত্রসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেফতারও হয়েছেন তিনি।

জানা যায়, কালাম সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জমি ও পুকুর দখল এবং পৌরসভার ঠিকাদারির কাজ নামে-বেনামে করে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন।

এলাকাবাসী বলছেন, শুধু পুকুর খননের মাধ্যমেই কালাম মাত্র কয়েক মাসে হাতিয়ে নিয়েছেন প্রায় তিনশ কোটি টাকা।তিন মেয়াদে পৌরসভা থেকে ঠিকাদারির মাধ্যমে আত্মসাৎ করেন শতকোটি টাকা।এছাড়া তার নিজের মালিকানায় রয়েছে প্রায় দুইশ বিঘা আয়তনের ৩০টি পুকুর।লিজ নিয়ে প্রায় পাঁচশ বিঘা পুকুরে মাছ চাষ করেন কালাম।এগুলোর মূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা।ঢাকা ও রাজশাহীতে রয়েছে তার ফ্ল্যাট ও প্লট।তাহেরপুর বাজারে রয়েছে দখল করা জমি।গ্রামে কিনেছেন প্রায় ৪০ বিঘা জমি।টয়োটা কোম্পানির ল্যান্ড ক্রুজার ব্র্যান্ডের দেড় কোটি টাকা মূল্যের গাড়িতে চড়েন।এগুলোর মূল্যও আরও প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা।এভাবে দরিদ্র পরিবারের সন্তান হয়েও সব মিলিয়ে কালাম এখন অন্তত পাঁচশ কোটি টাকার মালিক।

৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কালাম এবং তার স্ত্রী তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র সায়লা পারভীনকে বাগমারায় দেখা যায়নি।

এলাকাবাসী বলছেন, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর এ দম্পতি গা-ঢাকা দিয়েছে।

রাজশাহী জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল আলম জানান, বাগমারার সাবেক সংসদ-সদস্য কালাম ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।তাকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশের অভিযান চলমান রয়েছে।

জানা যায়, প্রকৌশলী এনামুল হক ২০০৮ সালে এ আসনের সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন।এর তিন বছর পর কালাম সাবেক বিতর্কিত সংসদ-সদস্য এনামুলের সঙ্গে প্রকাশ্যে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন।

বাগমারার ১৫টি ইউনিয়নের নিয়ন্ত্রণ নেন এনামুল।আর কালামের নিয়ন্ত্রণে ছিল দক্ষিণ বাগমারা বলে পরিচিত তাহেরপুর ও গোয়ালকান্দি।

সর্বশেষ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে মেয়র থাকা অবস্থায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন কালাম।মনোনয়ন পেয়েই গোটা বাগমারায় ত্রাস সৃষ্টি করেন তিনি। নির্বাচনে জয়ী হয়ে তিনি তাহেরপুর পৌরসভায় স্ত্রী সায়লা পারভীনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী করেন।কালামের ভয়ে অন্য কেউ আর মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সাহস পাননি।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জানান, গত সংসদ নির্বাচনে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে কালামকে কয়েক দফা শোকজ করে নির্বাচন কমিশন।এ সময় তার বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন মামলাও করে।এরপর নির্বাচনে জয়ী হয়ে তাহেরপুর পৌরসভা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সোহেল রানাকে সঙ্গে নিয়ে বাগমারা ও পাশের দুর্গাপুর উপজেলায় মানুষের জমি জোর করে দখল করে পুকুর কাটা শুরু করেন কালাম। মাত্র সাত মাসের মধ্যে বাগমারা ও দুর্গাপুরে অন্তত তিন হাজার বিঘা পুকুর খনন করা হয়।এর মাধ্যমে হাতিয়ে নেন প্রায় ৩০০ কোটি টাকা।

বাগমারা উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক সরকার বাবু ওরফে আর্ট বাবু বলেন, আমি নির্বাচনে মেয়র পদে অংশ নিতে চেয়েছিলাম; কিন্তু কালাম ও তার সশস্ত্র বাহিনী এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে।ফলে আমার মতো অন্যরাও নির্বাচনে অংশ নেননি। তাহেরপুর সদরের স্থানীয়রা জানান, কালাম মেয়র থাকা অবস্থায় তাহেরপুর বাজারে অন্তত ৮ কোটি টাকা মূল্যের একটি জমি দখল করে নেন। ওই জায়গাটি তাহেরপুর মন্দিরের নামে থাকলেও তাহেরপুর কলেজ জায়গাটি ব্যবহার করত। কিন্তু কালাম মেয়র হয়ে সেটি দখল করে পাঁচতলা মার্কেট গড়ে তোলেন। কালাম পৌরসভার রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে বিভিন্ন উন্নয়নকাজের ঠিকাদারি তার সহযোগীদের লাইসেন্সে তিনি নিজেই করতেন। এভাবে তিনি তিন মেয়াদে মেয়র থাকাকালে শুধু পৌরসভা থেকেই ঠিকাদারি ও দুর্নীতির মাধ্যমে অন্তত শতকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এছাড়া গ্রামে তার একটি দোতলা আলিশান বাড়ি রয়েছে। রাজশাহী শহরের বড় বনগ্রাম এলাকায় রয়েছে ১০ কাঠা জমি। রাজশাহী নগরীর পদ্মা আবাসিক এলাকায় এবং ঢাকায় রয়েছে ফ্ল্যাট।

এদিকে যুবদল নেতাকে গুলির ঘটনায় ১৭ আগস্ট কালাম ও স্ত্রী সায়লা পারভীনসহ ২২ জনের নামে মামলা করেছেন আব্দুল মতিন নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, ১২ বছর ধরে বামগারায় কালাম বাহিনী ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। পান থেকে চুন খসলেই তার বাহিনীর হাত থেকে এলাকার নিরপরাধ মানুষ রক্ষা পায়নি।

সুত্র : যুগান্তর


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ

x
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com