পাভেল মিয়া, বগুড়া জেলা প্রতিনিধি: উপজেলার সারিয়াকান্দি ডিগ্রি কলেজের দুর্নীতিগ্রস্ত অধ্যক্ষ মোঃ সাইদুজ্জামান ও অন্যায় কাজে সহযোগীতা করায় গভর্নিং বডির সভাপতি মমতাজুল রহমান মন্ডলের অপসারণের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ তৌহিদুল রহমানের বরাবরে স্মারলিপি দিয়েছেন অত্র কলেজের শিক্ষকমন্ডলী ও কর্মচারীবৃন্দ।
মঙ্গলবার (১৩ ই আগষ্ট) বেলা সাড়ে ১২টায় উপজেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেন,অত্র কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল মুনজুর মোর্শেদ,সহকারি অধ্যাপক হাবিবুর রহমান, আনোয়ারুল ইসলাম,আ হ ম আব্দুল রউফ, এসএম তৌহিদুর ইসলাম, রেজ্জাকুল আহসান, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্রতিনিধি রুবেল মিয়া,তামান্না আক্তার প্রমুখ।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, নিয়োগ বোর্ডে নূন্যতম ৩ জন প্রার্থী উপস্থিত থাকার কথা, কিন্তু তার ভাড়া করা একজন প্রার্থীসহ দুইজন প্রার্থী নিয়ে সাজানো পরীক্ষার মাধ্যমে অবৈধভাবে দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ প্রাপ্ত হন। নিয়োগ বাণিজ্য-শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে বিপুল পরিমাণ ঘুষ গ্রহণ করে অযোগ্য ও আত্মীয়দের নিয়োগ দেন।শিক্ষক-কর্মচারীদের উচ্চতর স্কেল ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে অবৈধভাবে বিপুল পরিমান টাকা উৎকোচ গ্রহণ করেন। ব্যবহারিক পরীক্ষার ক্ষেত্রে উচ্চহারে চাঁদা আদায়ের জন্য সিনিয়র শিক্ষকদের বাদ রেখে জুনিয়র শিক্ষকতদের দায়িত্ব দিয়ে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদা হিসেবে আদায় করেন।
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় স্টাডি সেন্টারের পরীক্ষার্থীদের নকল করার প্রলোভন দিয়ে মাথাপিছু ১০০০/= (এক হাজার টাকা) করে চাঁদা উত্তোলন করতেন এবং অত্র কলেজের শিক্ষকদের বঞ্চিত করে বাইরের শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে ঘুষ বাণিজ্য করেন। সঙ্গীত বিভাগ খোলার নামে তার নিজের লোক নিয়োগ দিয়ে উক্ত বিষয়ে কোনো শিক্ষার্থী না থাকার পরেও কলেজ ফান্ড থেকে বেতন ও বোনাস প্রদান এবং বিষয় খোলার নামে হাজার হাজার টাকা তছরুপ করেন।
হিসাব রক্ষক বৈধভাবে নিয়োগের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও নিজের লোককে খন্ডকালীন হিসেবে নিয়োগ দিয়ে অর্থ তছরুপের পথ সুগম করেন। নিজের ফাই-ফারমায়েশ খাটানোর জন্য দলীয় বিবেচনায় উৎকোচ গ্রহণের মাধ্যমে খন্ডকালীন আয়া নিয়োগ দিয়ে কলেজের অর্থ তছরূপ করেন। অনার্স শিক্ষকদের বেতন ২০০০/= (দুই হাজার টাকা) করে বৃদ্ধির জন্য প্রতি ধাপে জন প্রতি ১০,০০০/= (দশ হাজার টাকা) করে ঘুষ নেন। সিনিয়র শিক্ষকদের সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে জোরপূর্বক ঘুষ গ্রহণ করেন। উল্লেখ্য বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মোঃ ফজলে রাব্বী (প্রভাষক, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি) কে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির কথা বলে ৩০,০০০/= (ত্রিশ হাজার টাকা) ঘুষ গ্রহণ করেন। কিন্তু তাঁর পদোন্নতি হয়নি। NTRCA এর মাধ্যমে সরকার কর্তৃক নিয়োগ প্রাপ্ত শিক্ষকদের যোগদান ও MPO এর সময় চাপ প্রয়োগ করে লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ গ্রহণ করেন। নারী শিক্ষকদের ক্ষেত্রে তাঁর আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি ছিল। সঙ্গ লাভের আশায় তাদেরকে বিভিন্ন ওসিলায় আপ্যায়ন করানো, ঢাকা, রাজশাহী, হোটেল মমইনসহ বিভিন্ন স্থানে তাদের নিয়ে ঘুরতেন এবং কলেজের টাকায় ব্যয়ভার বহন করতেন এবং মনোরঞ্জনের জন্য সঙ্গীত বিভাগ খোলার নাম করে গানের আসর বসাতেন।কলেজের গাড়ী না থাকা সত্ত্বেও নিজের ব্যক্তিগত গাড়ীর ড্রাইভারের বেতন কলেজ ফান্ড থেকে প্রদান করা হতো। কোনো অভিযোগ না থাকা সত্ত্বেও খেয়াল খুশিমত শিক্ষকদের বেতনভাতাদি (কলেজের অংশ) বন্ধ রাখতেন। ২০২০ সালে এইচ এস সি পরীক্ষার্থীদের ফরমফিলাপের টাকা বোর্ড কর্তৃক ছাত্র-ছাত্রীদের ফেরত দিতে নির্দেশনা দিলেও ফেরত দেওয়া হয়নি। উল্লেখ্য যে, ২০২০ সালে অটোপাস দেওয়া হয়েছিল। অতএব, মহোদয় সমীপে বিনীত প্রার্থনা উপরোক্ত অভিযোগসমূহের প্রেক্ষিতে তাকে অপসারন করে কলেজের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আপনার মর্জি হয়।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ নিহাল খান
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নিয়ম মেনে তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিবন্ধনের জন্য আবেদিত।