‘প্রতি বছরই নতুন কিছুর পরিকল্পনা থাকে।সবসময় চ্যালেঞ্জিং কিছু কাজ করতে চেয়েছি, যা আগে করিনি।নাটক কিংবা সিনেমায় অভিনয়ের পাশাপাশি এবার বিদেশি ভাষার সিরিজের ডাবিং করলাম।এটা আমার কাছে মনে হয়েছে চ্যালেঞ্জিং।যখন এসআরকে থেকে এ কাজের প্রস্তাব এলো, তখন আর না করতে পারিনি।সব মিলিয়ে এ সিরিজে ভয়েস দিয়ে ভালো লেগেছে’- কোরিয়ান সিরিজে ডাবিংয়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে এভাবেই বলেন অভিনেতা ও মডেল আবদুন নূর সজল।
দেড় দশকেরও বেশি সময় অভিনয়ের সঙ্গে আছেন সজল।দীর্ঘ ক্যারিয়ারে নাটক, টেলিছবি ও চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি মডেলিংও করেছেন।এবারই প্রথম কোরিয়ান সিরিজের ডাবিং করলেন তিনি।
জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নিজেকে প্রস্তুত করে পা দিয়েছেন এ অভিনেতা।জনপ্রিয়তার পেছনে না ছুটে অধ্যবসায় আর পরিশ্রম করে এগিয়ে গেছেন সাফল্যের পথে।তাই তো টিভি নাটকের নির্মাতাদের পছন্দের তালিকায় থাকে তাঁর নাম।টিভি নাটকের পাশাপাশি বড় পর্দায় ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন সজল।
নাদের চৌধুরীর ‘জ্বীন’, হূদি হকের ‘১৯৭১ সেইসব দিনগুলি’, আবু সাঈদের ‘সংযোগ’, জাহিদ হোসেনের ‘সুবর্ণভূমি’ সিনেমার কাজ শেষ করেছেন তিনি।প্রতিটি সিনেমায় ব্যতিক্রমী চরিত্রে তাঁকে দেখা যাবে।এ ছাড়াও সাহিদ উন নবীর ‘পাপ ড্যাডি’ ছবিতেও অভিনয় করেছেন তিনি।এটি ওটিটিতে মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানান সজল।
একক নাটক নিয়ে সজলের ব্যস্ততা থাকলেও বেশ কয়েক বছর ধারাবাহিক নাটকে দেখা যায়নি তাঁকে।সম্প্রতি তিনি অভিনয় করেছেন বিটিভির একটি ধারাবাহিকে।নাটকের নাম ‘নায়কের নাম কবি’।
সজলের ভাষ্যে, ‘কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলনের লেখা আমার খুব পছন্দ।তাঁর সংলাপের প্রেমে পড়েছি বলেই এতে অভিনয় করেছি।আর নাদের চৌধুরী পছন্দের অভিনেতা ও নির্মাতা।তিনি ধারাবাহিকটি নির্মাণ করেছেন। এ নাটকের মধ্যে সামাজিক বার্তা রয়েছে।আমরা মানুষকে মানুষ হিসেবে মূল্যায়ন করি না।কিন্তু আমাদের কী কর্তব্য সেটি দেখানো হয়েছে নাটকে।বার্তাবহনের গল্পগুলো আমাকে বেশ টানে।গত কয়েক বছরে আমি সেসব কাজই করেছি, যাতে সামাজিক বার্তা রয়েছে।’
চলচ্চিত্র ও ওয়েব মাধ্যমের কাজ নিয়ে ইদানীং বেশি ব্যস্ততা যাচ্ছে।টিভি নাটকে অভিনয় কমিয়ে দিয়েছেন মনে হয়- ‘মাধ্যম আমার কাছে বড় গুরুত্বের বিষয় নয়।বেশি কাজ করলেই দর্শক আমাকে মনে রাখবে,এ কথা বিশ্বাস করি না।সংখ্যা নয়, দর্শক মনে রাখে ভালো কাজের কথা। যে ধরনের গল্প দর্শকের মনে দাগ কাটবে, তেমন কিছু নাটক, টেলিছবি বা চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে।আমি অনেক মেধাবী নই, যথেষ্ট পরিশ্রমী।যে কোনো চ্যালেঞ্জিং চরিত্রের জন্য কষ্ট করতে রাজি’- বললেন সজল।
তাঁর এ কথায় বোঝা যায়, জনপ্রিয়তাকে পুঁজি করে যে কোনো কাজে তাঁর আগ্রহ নেই।সামাজিক মাধ্যমেও সরব সজল।প্রায়ই তাঁকে দেখা যায় নতুন ভিডিওতে।
তিনি বলেন, ‘এটি সত্যি, অনেকদিন সামাজিক মাধ্যমে আমি একদমই ছিলাম না।এবার যখন নিউইয়র্কে গিয়েছি, তখন ভিডিওর জার্নি শুরু হয়।ওখানে আমার দুই বন্ধু অভিনেত্রী রোমানা ও মিলা ইসলাম থাকে।মিডিয়াতে কাজের সুবাদে ওদের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।তাঁরা কেউই এখন মিডিয়াতে নেই।কিন্তু আমি যতবার নিউইয়র্কে গিয়েছি প্রতিবারই তাদের এয়ারপোর্টে পেয়েছি। সেই বন্ধুত্বের টানের জন্য ধন্যবাদ দিলেই যথেষ্ট হতো না।সে কারণেই মনে হয়েছে, যখন যে ঘটনা ঘটছে, তার একটি ভিডিও করছি; যা পরবর্তী সময়ে নিজেও দেখতে ভালো লাগে।’
লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনের ব্যস্ত জীবনে কিছুটা সময় পেলে কী করেন? এমন প্রশ্নে সজলের উত্তর- ‘বাবাকে নিয়ে চলে যাই গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীতে।পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সুন্দর সময় কাটানোর চেষ্টা করি।এটাই তো আমার আসল ঠিকানা।’