পাভেল মিয়া, সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি:দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ট্রাক প্রতীক মো. ইয়াসির রহমতুল্লাহ ইন্তাজ তার নিজ বাড়িতে আজ সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের সঙ্গে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। সংবাদ সম্মেলনে ইয়াসির নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে বেশ কিছু ক্ষোভ ও অভিযোগের কথা জানান।
ইয়াসির বলেন, গত ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার দিনে তিনটি প্রস্তাব করেছিলাম জেলা প্রশাসকের কাছে। আমার প্রস্তাবগুলো ডিসি মহোদয় আমলে নিয়ে এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দেন । কিন্তু দুঃখের বিষয় হল নির্বাচনের আর মাত্র দুই দিন বাকি আছে এখন পর্যন্ত আমার একটি প্রস্তাবও বাস্তবায়ন করেননি জেলা প্রশাসক মহোদয়।
আমি প্রথমে অনুরোধ করেছিলাম বগুড়া-১ আসনে নির্বাচন কমিশনার কর্তৃক যে সকল কর্মকর্তাগণ দায়িত্ব পালন করবেন তাদেরকে যেন এই আসন থেকে নিয়ে অন্য আসনে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাহলে তারা আর পক্ষপাতিত্ব করার সুযোগ পাবেন না। কিন্তু অতি দুঃখের বিষয় হল আমার এই প্রস্তাবটি কার্যকর করা হয়নি। আমার আরেকটি প্রস্তাব ছিল স্থানীয় থানা থেকে যেন পোলিং এজেন্ট ও প্রিজাইডিং অফিসারদের নিয়োগ না করা হয়। তাদেরকে যেন এক থানা থেকে অন্য থানায় নিয়োগ দেওয়া হয়। এই প্রস্তাবটুকুও কিন্তু বাস্তবায়ন করা হয়নি। আমি জানতে পারলাম যে তাদেরকে স্থানীয় থানা থেকেই নিয়োগ করা হচ্ছে। এর ফলে একটি নতুন শঙ্কা তৈরি হলো। তাই আমি সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যপারে শঙ্কিত।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমার বেশ কিছু নারী এবং পুরুষ কর্মী আমার প্রচারণার কাজে গিয়ে একাধিক স্থানে হুমকি-ধমকি ও ভয়ভীতির শিকার হয়েছেন। আমার এক নারী কর্মীকে প্রকার্শে হুমকি দিয়েছেন ঈগল প্রতীকের এক সমর্থক লাকি মেম্বারের ছেলে মোহাম্মদ মামুন।
তিনি আরো বলেন, নির্বাচন কমিশন থেকে নির্বাচনের বেদে দেওয়া খরচের হিসাবের বাইরে কোন প্রার্থী অতিরিক্ত খরচ করছে কিনা এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের একটি মনিটরিং টিম থাকা জরুরি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন মনিটরিং টিম কাজ করছে বলে আমার জানা নেই। আমার জানামতে,এখানে তবলা প্রতীক ও ঈগল প্রতীকের একাধিক বার যে শোডাউন হয়েছে এতে যেসব লোকজন আনছে প্রত্যেকেই টাকার বিনিময়ে এসেছে আর এই টাকার হিসাব করলে দেখা যাবে শুধু শোডাউনই তাদের ২৫ লক্ষ টাকার বেশি খরচ করে ফেলছে। আমি আপনাদের মাধ্যমে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য।
ইয়াসির রহমতুল্লাহ ইন্তাজ বলেন, সারিয়াকান্দি এবং সোনাতলার বেশ কিছু ভোটকেন্দ্র অতি ঝুঁকিপূর্ণ কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রশাসন কোন প্রকার উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। অতি দ্রুত ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলো প্রশাসন কতৃক চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিবেন বলে আমি আশা করছি।
তিনি বলেন, আমরা জানতে পারলাম চরাঞ্চলে ব্যালট পেপার আগের রাত্রে নেওয়া হবে। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হল দূর্গম চরাঞ্চল এলাকা এমনিতেই ঝুঁকিপূর্ণ, যদি আগের রাতে ব্যালট পেপার পৌঁছে দেওয়া হয় তাহলে তো ভোট কারচুপির বিষয়টা অবশ্যই থেকে যায়। এ ব্যাপারে আমি নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি ভোটের দিন সকালে যেভাবেই হোক ব্যালট পেপার পৌঁছে দেওয়ার জন্য।
আরো অভিযোগ জানিয়ে ইয়াসির বলেন, আমার এ আসনে তবলা প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহাজাদী আলম লিপির হাজবেন্ড বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. হামিদুল আলম মিলনকে তার স্ত্রী লিপির পক্ষে সরকারি গাড়ি নিয়ে স্ত্রীর জন্য প্রচারণা এবং অসুস্থতার কথা বলে ছুটি নিয়ে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত ছিলেন বলে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। আমার অভিযোগ হল যে প্রার্থীর জন্য কাজ করতে গিয়ে চাকরি থেকে বরখাস্ত হলেন সেই প্রার্থীকেও কেনো বিচারের সম্মুখীন করা হবে না। এই বিষয়টিও ভেবে দেখার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে অনুরোধ করছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মো. ইয়াসির রহমতুল্লাহ ইন্তাজের পার্সোনাল প্রেস সেক্রেটারি মো. ইব্রাহীম হোসেন নিরব। আরো উপস্থিত ছিলেন মো. সাইফুল ইসলাম পুটু, মো. মিকানু রহমান, আব্দুল আজিজ সহ সাংবাদিকবৃন্দ।