সোমবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৫২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
নালিতাবাড়ীতে কৃষি মেলার শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠিত ঢাকা মাতাতে আসছে পাকিস্তানের বিখ্যাত ব্যান্ড ‘জাল’ রাজশাহীতে গণপিটুনিতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নিহত সারিয়াকান্দিতে পৌর মৎস্যজীবী দলের পূর্নাঙ্গ কমিটিতে সভাপতি কাঞ্চন, সম্পাদক ঘেরু পর্তুগাল বিএনপির নেতাদের সাথে রাষ্ট্রদূত রেজিনা আহমেদের সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় সারিয়াকান্দিতে পৌর ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে মতবিনিময় সভা সারিয়াকান্দিতে পৌর ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে মতবিনিময় সভা মান্দায় বিএনপির মতবিনিময় ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত আরএমপির দায়িত্ব নিলেন নতুন কমিশনার আবু সুফিয়ান গোদাগাড়ী ও তানোর উপজেলা বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
নোটিশ :
দেশের জনপ্রিয় সর্বাধুনিক নিয়ম-নীতি অনুসরণকৃত রাজশাহী কর্তৃক প্রকাশিত নতুনধারার অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘যমুনা প্রতিদিন ডট কম’

যে কারণে তোষামোদ করতে নিষেধ করেছেন রাসূল সা.

ইসলাম মানবজাতিকে শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা দান করেছে, সর্বোচ্চ প্রশংসায় প্রশংসিত করেছে।অভিনন্দন-অভ্যর্থনা, বাহবা মানুষের আত্মমর্যাদাবোধ জাগিয়ে তোলে; ভালো কাজের অনুপ্রেরণা দেয়।কিন্তু অতিরিক্ত প্রশংসা মানুষকে বিপথগামী করে।নীতির পথ থেকে দূরে ঠেলে দেয়।মানবজীবনে অতিরিক্ত প্রশংসা করাকে ইসলামে কঠিনভাবে নিষেধ করা হয়েছে।

মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘যারা স্বীয় কৃতকর্মে সন্তুষ্ট এবং তারা যা করেনি তার জন্য প্রশংসা প্রার্থী, এমন লোকদের সম্পর্কে ধারণা কোরো না যে তারা শাস্তিবিমুক্ত; বরং তাদের জন্য আছে যন্ত্রণাদায়ক কঠিন শাস্তি।’-(সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৮৮)

কারো সামনে কিংবা পেছনে অতিরিক্ত প্রশংসা করতে নিষেধ করেছেন রাসুল (সা.)।তিনি বলেন, ‘কারো সামনে তার প্রশংসা করা তার পিঠে ছুরি মারা বা তার গলা কেটে ফেলার সমান।’-(আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ৩৩৫)

অন্য একটি হাদিসে নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘কেউ তোমাদের সামনাসামনি প্রশংসা করলে তার মুখে তোমরা পাথর ছুড়ে মারো।’-(আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ৩৪০)

একজন সাহাবি রাসুল (সা.)-এর কাছে অন্য এক সাহাবি সম্পর্কে উচ্চ প্রশংসা করেন, তা শুনে রাসুল (সা.) বলেন, ‘আফসোস, তুমি তো তোমার সঙ্গীর গর্দান কেটে ফেললে! কথাটি নবীজি (সা.) তিনবার বলেন।অতঃপর বললেন, যদি কারো প্রশংসা করতেই হয়, তাহলে সে যেন এভাবে বলে যে আমি তার ব্যাপারে এমন এমন ধারণা পোষণ করি।কারণ তার প্রকৃত হিসাব মহান আল্লাহ জানেন।'(বুখারি, মুসলিম, মিশকাত : ৪৮২৭)

আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন-‘দুর্বল ইমানের পরিচয় হলো, পার্থিব ধন-সম্পদের লোভে অন্যের অবাস্তব প্রশংসা করা বা তোষামোদ করা।’

রাসুল (সা.) বলেছেন, উম্মতের ব্যাপারে আমার যে বিষয়গুলোতে ভয় হয়, তন্মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বাকপটু মুনাফিক।(মুসনাদে আহমদ : ১/২২)

এ কারণে সাহাবায়ে কেরাম এ ধরনের কোনো চাটুকারকে মিষ্টি কথায় প্রতারণা করার সুযোগই দিতেন না।বরং কেউ চাটুকারিতা করার চেষ্টা করলে তাত্ক্ষণিক তার বিরুদ্ধে রাসুল (সা.)-এর শেখানো পদ্ধতিতে ব্যবস্থা নিতেন।

আবু মামার (রহ.) থেকে বর্ণিত, কোনো একদিন এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে কোনো এক প্রশাসকের সামনেই তার প্রশংসা করতে শুরু করে।এতে মিকদাদ ইবনুল আসওয়াদ (রা.) তার মুখমণ্ডলে ধুলাবালি নিক্ষেপ করতে থাকেন এবং বলেন, রাসুল (সা.) আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন, আমরা যেন চাটুকারের মুখে ধুলাবালি নিক্ষেপ করি।(তিরমিজি, হাদিস : ২৩৯৩)

তোষামোদের কুফল বা ক্ষতির দিকগুলো আলোচনা করতে গিয়ে হজরত ইমাম গাজ্জালি (রহ.) তার এক গ্রন্থে উল্লেখ করেন, অবাস্তব প্রশংসা বা তোষামোদ পাঁচটি ক্ষতি বয়ে আনে।তন্মধ্যে তোষামোদকারী ব্যক্তি তিনটি ক্ষতির সম্মুখীন হয় আর তোষামোদকৃত ব্যক্তি সম্মুখীন হয় দুটি ক্ষতির।

তোষামোদকারী ব্যক্তি যে তিনটি ক্ষতির সম্মুখীন হয় তা হলো- এক. তোষামোদ করার মাধ্যমে তোষামোদকারী ব্যক্তি মূলত মিথ্যা ও প্রবঞ্চনার আশ্রয় নিয়ে থাকে।দুই. তোষামোদকারী ব্যক্তি তোষামোদের মাধ্যমে মুনাফেকি বা কপটতার শিকার হয়।তিন. অন্যকে গোনাহে লিপ্ত করার ক্ষতি।

কারণ, তোষামোদকৃত ব্যক্তি তোষামোদকারীর অতিরিক্ত প্রশংসা শুনে নিজেকে বড় ও যোগ্য মনে করে।অন্যকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করতে থাকে।আর এগুলোর দায় বা গুনাহ মূলত তোষামোদকারী ব্যক্তির উপর বর্তায়।

ইসলাম মনে করে, তোষামোদ মূলত মানুষের যোগ্যতাকে বিনষ্ট করে।কারণ, মানুষ যখন যোগ্যতা প্রদর্শন ছাড়াই প্রশংসা ও স্তুতি শুনতে পায় তখন মেধা ও শ্রম ব্যয় করতে আগ্রহী হয় না।ফলে আত্মতুষ্টিতে ভুগতে থাকে।আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা যেন মুসলিম উম্মাহকে তোষামোদ থেকে বাঁচার তাওফিক দান করেন আমীন।

লেখক: বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ লেখক ও কলামিস্ট হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী ছাহেব।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ

x
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com