চিহ্নিত প্রতারক ও বিভিন্ন মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামী কামাল প্রধান অবশেষে আটক হয়েছে।আটকের পর বিজ্ঞ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রতারক কামালকে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে।
ডান্ডাবেরি পড়া অবস্থায় আজ ২৯ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জের আদালতে হাজির করা হয়।
জানা যায়, জাল দলিল সৃজন, চেক জালিয়াতি, চাকুরী, বিদেশে লোক পাঠানোর কথা বলে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাৎ ও রাষ্ট্রবিরোধী সহ বন্দর থানাধীন বাগবাড়ী এলাকার চিহ্নিত বাটপার, প্রতারক ও পরবিত্তলোভী কামাল প্রধানের বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মালার পাহাড়।নারী কেলেঙ্কারিসহ বিভিন্ন বিশিষ্টজনদের বø্যাকমেইলিংয়ের মাধ্যমে অপপ্রচারকারী হিসেবেও রয়েছে কামালের যথেষ্ট পরিচিতি।তার মধ্যে সরকার অনুমোদনহীন কয়েকটি পত্রিকারও সম্পাদক-প্রকাশক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন মহলের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ই ছিল তার মূল পেশা।
এছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষকে চাঁদাবাজির জন্য ভয়ভীতি প্রদর্শন করে মিথ্যা মামলা মোকদ্দমা দিয়ে হয়রানী করে আসছিল।একজন মামলাবাজ হিসেবেও কামালের পরিচিতি ছিল যথেষ্ট।প্রায় ১৫টির মতো নামে বেনামে ফেইক ফেসবুক আইডি খুলে অপপ্রচার চালিয়ে মানুষের সম্মানহানী সহ প্রতারণা ও প্রলোভনের মাধ্যমে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিত।
সাজাপ্রাপ্ত মামলার বিবরণে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানাধীন মিনারবাড়ী এলাকার মোঃ নুরুজ্জামানের ছেলে মনির হোসেনের কাছ থেকে ৩ শতাংশ সম্পত্তি বিক্রয়ের নিমিত্তে বায়না নামা দলিল সম্পাদন করা বাবদ ৬ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা নেয় একই থানার বাসিন্দা বাগবাড়ী এলাকার আবুল প্রধানের ছেলে প্রতারক কামাল প্রধান।পরবর্তীতে ভুক্তভোগী মনির হোসেন ৪২৮৭ নম্বরের দলিলটি খোজ খবর নিয়ে দেখেন সম্পূর্ণ ভুয়া।এরপর ভুক্তভোগী মনির হোসেন টাকা ফেরত চাইলে বাটপার কামাল তালবাহানা করলে নারায়ণগঞ্জ বিজ্ঞ আমলী ম্যাজিস্ট্রেট ‘ঘ’ অঞ্চল আদালতে কামালের বিরুদ্ধে একটি সিআর মামলা দয়ের করেন।মামলা নং-১২০/১৯।
এরপর সুচতুর কামাল উল্টো বাদী মনির হোসেনের বিরুদ্ধে হয়রানীমূলক কাল্পনিক ঘটনা সাজিয়ে মামলা দায়ের করে।কিন্তু দীর্ঘ ধৈর্য্যরে পর অবশেষে টি আর মামলা নং- ৫৯৮/ ২০১৯ ও সিআর১২০/১৯ এর মামলায় গত ২০ সেপ্টেম্বর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালত এর বিচারক মোহাম্মদ শামছুর রহমান মনির হোসেনের পক্ষে রায় প্রদান করেন এবং প্রতারক কামালকে দোষী সাব্যস্ত করে দন্ড বিধির ৪২০ ধারায় এক বছরের সাজা ও ৫ হাজার টাকা অর্থ দন্ডে দন্ডিত করেন অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদন্ডে দন্ডিত করা হয়।
বর্তমানে প্রায় পনের দিন যাবৎ প্রতারক কামাল প্রধান নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে হাজত বাস করছে।প্রতারক কামাল প্রধান আটক হওয়ার খবরে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো।
উল্লেখ্য যে, কামাল প্রধানের বিরুদ্ধে চেক ডিজঅনারের মামলায় একটিতে ৮ মাসের সাজা, আরেকটিতে ৬ মাসের সাজা সহ আরো একটিতে ৬ মাসের সাজা প্রদান করেন নারায়ণগঞ্জের বিজ্ঞ আদালত।বর্তমানে প্রতারণার মামলায় ১ বছরের সাজায় দন্ডিত হয়ে জেল হাজত বাস করছে।
২৯ অক্টোবর সকালে কারাগার থেকে কয়েকটি মামলায় হাজিরা দিতে ডান্ডাবেরি পরিহিত অবস্থায় নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনা হয়।পরে আদালত থেকে আবারও কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
কামালের আটকের খবরটি ছড়িয়ে পড়লে ভুক্তভোগীরা স্বত্বির নিঃশ্বাস ফেলে এবং নারায়ণগঞ্জের সচেতন মহল প্রতারক কামাল প্রধানের আরও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করে।