জামালপুরের ইসলামপুরে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে ৫ দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গোৎসবের সমাপ্তি হয়েছে।
এর আগে শারদীয় দুর্গোৎসবের শেষ দিনে সোমবার জেলার প্রতিটি মন্ডপে মহানবমী ও মঙ্গলবার বিজয়া দশমী পূজা সম্পন্ন হয়।পূজার শেষ দিনে শহরের মন্ডপগুলো ঢাক-ঢোল, কাঁসর ঘণ্টা, শাঁখের ধ্বনি ও ধূপের ধোঁয়া, আর ভক্তিমন্ত্রে মূখর হয়ে ওঠে।সেই সাথে বর্ণাঢ্য আলোকসজ্জায় উদ্ভাসিত হয়েছিল মন্ডপগুলো।
এই দিনেই দেবী দুর্গা মর্ত্যলোক (পৃথিবী) ছেড়ে ফিরে যাবেন স্বামীগৃহ কৈলাসে।দেবী দুর্গার বিদায়ে মন্ডপে মন্ডপে ছিল বিষাদের ছায়া।উলুধ্বনি, শঙ্খ, ঘণ্টা আর ঢাকঢোলের বাজনায় ছিল দেবীদুর্গার বিদায়ের ছায়া।সনাতন ধর্মাবলম্বি সম্প্রদায়ের লোকেরা গত ৫দিন হাসি-আনন্দ আর পূজা-অর্চনার মধ্য দিয়ে কাটিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) বিকেল ৪টার পর ইসলামপুর কেন্দ্রীয় মন্দিরসহ শহরের বিভিন্ন পুজামন্ডপ থেকে প্রতিমা নিয়ে বিসর্জনের জন্য বিজয়া শোভাযাত্রা করে ইসলামপুর শহরের পূর্ব পাশে অবস্থিত বহ্মপূত্র নদে যাওয়া হয়।সেখানে গিয়ে একে একে নদীতে প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হয়।সন্ধ্যার পর প্রতিমা বিসর্জন দেয়া শেষ হয়।
ইসলামপুরের গুঠাইল এলাকার প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হয় যমুনা নদীতে।
অন্যান্য বারের ন্যায় এবার ইসলামপুর শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে শত শত হিন্দু-মুসলিম নারী, পুরুষ, শিশু-কিশোর ছুটে আসে প্রতিমা বিসর্জন দেখতে।
এ সময় শহরের ধর্মকূডা বাজার, পলবান্ধা এবং পাটনি পাড়া এলাকায় রাস্তার দু’পাশ দর্শণার্থীদের পদচারনায় ভরে উঠে।রাস্তারগুলোর দু’পাশে অস্থায়ী দোকানীরা বিভিন্ন খাবারের দোকান, বাচ্চাদের খেলনাসহ বিভিন্ন ধরনের সামগ্রীর দোকান সাজিয়ে বসেন।প্রতিমা বিসর্জনের দৃশ্য দেখতে আসা দর্শণার্থীরা এসব খাবারসহ অন্যান্য সামগ্রী কিনে নিয়ে বাড়ী ফিরে যায়।
এদিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিমা বিসর্জনের সময় সার্বিক নিরাপত্তায় পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়।পাশাপাশি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যবৃন্দ ও ইসলামপুর ফায়ার সার্ভিসের একটি দল প্রতিমা বিসর্জনের সময় অবস্থান করেন।
দশমী উৎসবের অংশ হিসেবে থাকে সিঁদুর খেলা।সনাতন ধর্মের নারীরা একে অপরকে সিঁদুর পড়িয়ে উৎসবে মেতে ওঠেন।বিজয়া দশমীতে উৎসবের পাশাপাশি দেবীর বিদায়ে বিষন্নতাও কাজ করে ভক্তদের মনে।
সরকারি ইসলামপুর কলেজের শিক্ষার্থী লোকনাথ কর্মকার বলেন, সনাতন ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দেবী ফিরে গেলেন স্বর্গলোকের কৈলাসে স্বামীর ঘরে।
একই কলেজের ইন্টারমিডিয়েট ফলপ্রার্থী চৈতি ধর বলেন, আগামী বছর শরতে আবার তিনি আসবেন এই ধরণীতে দেবী।যা তার বাবার গৃহ।
লব সরকার বলেন, প্রতিমা বিসর্জনের জন্য সব ধরণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।