সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে ১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের প্রতিবাদ ও এর সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে বেসরকারি সংস্থা বরসা’র কার্যালয় ঘেরাও ও মানববন্ধন করেছে গ্রাহকরা।
রোববার (২২ জানুয়ারি) উপজেলার ধলবাড়িয়া ইউনিয়নে বরসার শাখা কার্যালয়ের সামনে হাজার হাজার গ্রাহকের উপস্থিতিতে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
মানববন্ধনে ধলবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সজল মুখার্জীর সভাপতিত্বে বক্তারা বলেন, বরসা এনজিও স্থানীয় গ্রাহকদের মোটা অংকের সুদ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ১০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এনজিওটির পরিচালক একেএম আনিছুর রহমান মারা যাওয়ার পর গ্রাহকের টাকা ফেরত দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন বর্তমান পরিচালক আশিকুর রহমান। তবে দীর্ঘ ১ বছর অতিবাহিত হলেও একজনও গ্রাহকের টাকাও ফেরত দেয়া হয়নি। দেশের বিভিন্ন উপজেলায় বরসার ২৩টি শাখা অফিস রয়েছে। এসব শাখা থেকে কোটি কোটি টাকা লুটে নিয়ে দেশের বাইরে বিপুল পরিমাণ সম্পদ গড়ে তুলেছেন এনজিওটির পরিচালক। টাকা ফেরত চাইতে গেলে এনজিও’র পরিচালক নিজের প্রভাব খাটিয়ে ও পুলিশের ভয় দেখিয়ে ভুক্তভোগীদের মুখ বন্ধ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
ভুক্তভোগী গ্রাহকদের অভিযোগ, সাধারণ মানুষের কোটি কোটি টাকা লুটে নিয়ে দেশের বাইরে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন এনজিওটির পরিচালক।
এসময় টাকা ফেরত না পেলে সাতক্ষীরায় এনজিওটির প্রধান কার্যালয়ের সামনে গিয়ে আমরণ অনশনসহ কঠোর কর্মসূচির আল্টিমেটাম দেন ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকরা।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন, মথুরেশপুর বাজার কমিটির সভাপতি আমিনুর রহমান, ভুক্তভোগী আব্দুর রাজ্জাক মল্লিক, তাপস মন্ডল, আব্দুর জব্বার, শওকত গাজী, নাজমুস সাদাত টিপু, শেখ ওকালাত মাস্টার প্রমুখ।
ধলবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সজল মুখার্জী জানান, ২০২২ সালের মার্চের ২০ তারিখে হাজারো গ্রাহক টাকা ফেরত পাবার দাবিতে বরসা এনজিওর ম্যানেজারকে আটকে রেখে অফিস ঘেরাও করেছিল। সেসময় কালিগঞ্জ থানার তৎকালীন ওসি গোলাম মোস্তফার উপস্থিতিতে হিসাব করে দেখা যায় নিট ৭৫ কোটি টাকাসহ লভ্যাংশ দিয়ে মোট ১০০ কোটি টাকা দায় রয়েছে এনজিওটির। তখন বরসা এনজিও’র সত্ত্বাধিকারী আশিকুর রহমান ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে টাকা পরিশোধ করবেন মর্মে ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে একটি চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন। এছাড়া ব্যাংক এশিয়ার বেশ কয়েকটি চেকে মোট ৭৫ কোটি টাকার হিসাব বসিয়ে দেন যা তৎকালীন ওসি গোলাম মোস্তফার কাছে ছিলো। কিন্তু এখন পর্যন্ত তিনি একটি টাকাও গ্রাহকদের ফেরত দেননি।
তিনি আরও জানান, সোমবার এ বিষয়ে কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর ভুক্তভোগী গ্রাহকরা স্মারকলিপি পেশ করবেন।
এ ব্যাপারে কালিগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমিনুর রহমান বলেন, যেহেতু লেনদেনের বিষয় সেহেতু অভিযোগ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে এ বিষয়ে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজিব খানের নেতৃত্বে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি বরসা কর্তৃপক্ষের সাথে বসাবসি করেছেন বলে জানা গেছে।