পরীক্ষায় নকল সরবরাহ, টাকা আত্মসাৎ এবং নারী কেলেঙ্কারিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগের পর ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ শাহ্ মো. জাহাঙ্গীর আলমকে বদলি করা হয়েছে।
বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ সরকারি কলেজ-২ শাখার প্রকাশিত একটি প্র্রজ্ঞাপন থেকে বদলির এ তথ্য জানা গেছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বিবিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডার শাহ্ মো. জাহাঙ্গীর আলম (১৬৭৮) কে পুনরাদেশ না দেয়া পর্য্ন্ত নিজ বেতন বা বেতনক্রমে গোপালগঞ্জের সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজে দর্শন বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে বদলি করা হলো।
সেই সঙ্গে আগামী ২৫ অক্টোবরের মধ্যে বর্তমান কর্মস্থল হতে অবমুক্ত হতে বলা হয়েছে।অন্যথায় একই তারিখ অপরাহ্ণে তাৎক্ষণিকভাবে অবমুক্ত মর্মে গণ্য হবেন বলে জানানো হয়েছে।
ইতিপূর্বে কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. খোরশেদুল আলম শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর ওই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে পরীক্ষায় নকল সরবরাহ, টাকা আত্মসাৎ এবং নারী কেলেঙ্কারি সহ নানা অনিয়মের অভিযোগে একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
অভিযোগে বলা হয়, গত ২০২২ সালের ১৩ আগস্ট আলফাডাঙ্গা সরকারি ডিগ্রি কলেজে যোগদানের পর ২০২১ সালের বাউবিতে অন্তর্ভুক্ত এইসএসসি এবং বিএ/বিএসএস প্রোগ্রামের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নকল সরবরাহের চুক্তিতে প্রতি পরীক্ষায় শিক্ষার্থী প্রতি সর্বনিম্ন ২০০ টাকা ও সর্বচ্চো ৫০০ টাকা করে গ্রহন করেছেন।এতে দুই হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা উঠিয়ে নিজে আত্মসাৎ করেছেন।তিনি কলেজে যোগদানের পর অনার্স ডিপার্টমেন্ট ও অন্যান্য বিভাগের খাতাপত্র বিক্রি করে প্রায় ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন।কলেজের বিভিন্ন প্রকল্প নামে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করে অবৈধভাবে টাকা উত্তোলনের বিষয়টি নিয়ে কলেজের শিক্ষকদের মাঝে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ খোরশেদুল অবসর সুবিধা ফাইলে স্বাক্ষর করতে দীর্ঘদিন গড়িমসি করে আমার কাছে ২ লক্ষ টাকা দাবি করে পরে ১ লক্ষ টাকা বিনিময়ে অধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলমের সাথে রফা হয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন।
উক্ত অধ্যক্ষ ২০২৩ সালের ডিগ্রি ও অনার্স পরিক্ষায় নিজের এলাকার বিশেষ ব্যক্তিদের ছেলে-মেয়েদের অনিবার্য কারণে ভিন্ন কক্ষে নকলের সহোগিতা করার জন্য তাঁর অনুসারি এক শিক্ষক দিয়ে সকল প্রশ্ন সমাধানের মাধ্যমে পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন।ফলে শিক্ষকরা চরমভাবে হতাশ হয়ে পড়েছেন।
তিনি যোগদানের পর লেছমা নামের ৪র্থ শ্রেণীর এক মহিলাকে বেসরকারি ভাবে নিয়োগ দিয়েছেন।তার সাথে অধ্যক্ষের অনৈতিক সম্পর্কের কথাও অভিযোগ উল্লেখ করছেন।অধ্যক্ষের আচারন সহ্য করতে না পেরে অফিস সহকারি রিজাউল হক গত ৩০ এপ্রিল অন্যত্র বদলি হয়ে গেছেন।
২০০৭ সালে পার্শ্ববর্তী বোয়ালমারী সরকারি ডিগ্রি কলেজ থেকে প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ ও নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগে প্রশাসন তাকে স্ট্যান্ড রিলিজ করে রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজে বদলি করেছিলেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।