ঢাকা ০২:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ০২ অক্টোবর ২০২৩, ১৭ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
বিশেষ বিজ্ঞপ্তি ::
দেশের জনপ্রিয় সর্বাধুনিক নিয়ম-নীতি অনুসরণকৃত রাজশাহী কর্তৃক প্রকাশিত নতুনধারার অনলাইন নিউজ পোর্টাল 'যমুনা প্রতিদিন ডট কম' এ আপনাকে স্বাগতম...
সংবাদ শিরোনাম ::
দুমকিতে ভুয়া ৩ ডিবি পুলিশ আটক! মালিক ও ব্যবসায়ীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন বাজার কমিটির সভাপতি শেখ ফরিদ মিয়া লাখাইয়ে গাড়ী চাপায় বাইসাইকেল আরোহী নিহত রাজশাহীতে বিশ্ব বসতি দিবস-২০২৩ উদযাপন সিংড়ায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ ও এলাকাবাসীর বিক্ষোভ সমাবেশ শালিখায় দেড় লক্ষাধিক টাকার চায়না জাল আগুনে ভস্ম বাঘ তাড়িয়ে জেলের ক্ষতবিক্ষত মাথা উদ্ধার করলো গ্রামবাসী টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে নবনির্মিত একাডেমিক ভবনের উদ্বোধন করলেন এমপি টিটু কাজিপুরে আরচেস এর উদ্যোগে আন্তর্জাতিক প্রবীন দিবস পালন নবাবগঞ্জে অটো রিক্সা শ্রমিক লীগের ইউনিয়ন কমিটি গঠন

কমেছে খেজুর গাছ ও গাছি

মনজুরুল আলম,লালমোহনঃ
  • আপডেট সময় : ০৮:২৯:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৩ ১৫৩ বার পড়া হয়েছে
যমুনা প্রতিদিন অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

শীতের সকালে মিষ্টি রোদে বসে সুস্বাদু খেজুরের রস খাওয়ার মজাই আলাদা। কিন্তু সেই গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী সুস্বাদু খেজুরের রস এখন আর তেমন দেখা যায় না। সময়ের পরিক্রমায় আধুনিক নগরায়নের ফলে হারিয়ে যাচ্ছে খেজুর গাছ এবং গাছের রস। এখন খেজুর গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় কমেছে গাছির সংখ্যাও।

একসময় লালমোহন উপজেলার মানুষ শীত মৌসুমে খেজুর গাছের রসের উপর নির্ভরশীল ছিল। অথচ দিন দিন কমে গেছে খেজুর গাছের সংখ্যা। ফলে শীতকালে দা-কাঁচি, একগাছি রশি, একদণ্ড বাঁশ ও কোমরে ঝোলানো হাড়ি নিয়ে গাছে উঠতে দেখা যায় না গাছিদের।

কয়েক বছর আগেও হেমন্তের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে গাছ কাটার প্রাথমিক কাজগুলো করার হিড়িক পড়ত। গায়ের পথে-ঘাটে, নদী বা পুকুরপাড়ে, বড় রাস্তার দুধারে বা খেতের আল ঘেঁষে শত শত গাছের শীর্ষভাগ বিশেষভাবে কাটতেন গাছিরা। ১৫-১৬টি পাতা রেখে গাছের উপরিভাগের বাকলসহ অপ্রয়োজনীয় অংশ পরিষ্কার করতেন। আড়াআড়িভাবে বাঁধা বাঁশের দণ্ডে দাঁড়িয়ে কোমরে ও গাছে রশি পেঁচিয়ে ধারালো দা দিয়ে গাছিদের গাছ কাটার দারুণ দৃশ্য এখন তেমন চোখে পড়ে না।

উপজেলার ধলিগৌর নগর ইউনিয়নের প্রয়াত হাফেজ নুরনবী মিয়ার ছেলে জিহাদুল ইসলাম জানান, তিনি তার বাবাকে রস সংগ্রহ করতে দেখেছেন সেই ছোটবেলা থেকেই। তখন প্রচুর রস আসত বাড়িতে। খেজুরের গুড়ের গন্ধে মৌ মৌ করতে পুরো বাড়ি। কিন্তু বর্তমানে গাছের সংখ্যা একেবারেই কমে গেছে। একসময় তারা কয়েকশ’ খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করতেন। কিন্তু এ বছর মাত্র ২০-২৫টি গাছ থেকে রস সংগ্রহ করছে। প্রতিটি গাছ থেকে দৈনিক ৪-৫ কেজি রস বের হয়। কাঁচা রস বিক্রি করা হয় প্রতি কেজি ১০০-১৫০ টাকা।

প্রায় ২০ বছর ধরে রস সংগ্রহ করে আসছেন লালমোহন উপজেলার কুন্ডের হাওলা গ্রামের নাসির উদ্দিন। তিনি জানান, সাধারণত একটি খেজুর গাছের রসের উপযুক্ত হতে প্রায় ৫-১০ বছর সময় লেগে যায়। আর একটি গাছ থেকে রস পাওয়া যায় ২০-২৫ বছর পর্যন্ত। তবে প্রতিটি গাছে কী পরিমাণ রস পাওয়া যাবে, তা নির্ভর করে গাছির দক্ষতা এবং গাছের উপর।

স্থানীয়রা জানান, আগে শীত এলে সহজেই মিলতো খেজুরের রস। কিন্তু এখন সারা গ্রাম খুঁজেও কোথাও খেজুরের গাছ বা গাছি কারও সন্ধান পাওয়া যায় না।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

কমেছে খেজুর গাছ ও গাছি

আপডেট সময় : ০৮:২৯:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৩

শীতের সকালে মিষ্টি রোদে বসে সুস্বাদু খেজুরের রস খাওয়ার মজাই আলাদা। কিন্তু সেই গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী সুস্বাদু খেজুরের রস এখন আর তেমন দেখা যায় না। সময়ের পরিক্রমায় আধুনিক নগরায়নের ফলে হারিয়ে যাচ্ছে খেজুর গাছ এবং গাছের রস। এখন খেজুর গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় কমেছে গাছির সংখ্যাও।

একসময় লালমোহন উপজেলার মানুষ শীত মৌসুমে খেজুর গাছের রসের উপর নির্ভরশীল ছিল। অথচ দিন দিন কমে গেছে খেজুর গাছের সংখ্যা। ফলে শীতকালে দা-কাঁচি, একগাছি রশি, একদণ্ড বাঁশ ও কোমরে ঝোলানো হাড়ি নিয়ে গাছে উঠতে দেখা যায় না গাছিদের।

কয়েক বছর আগেও হেমন্তের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে গাছ কাটার প্রাথমিক কাজগুলো করার হিড়িক পড়ত। গায়ের পথে-ঘাটে, নদী বা পুকুরপাড়ে, বড় রাস্তার দুধারে বা খেতের আল ঘেঁষে শত শত গাছের শীর্ষভাগ বিশেষভাবে কাটতেন গাছিরা। ১৫-১৬টি পাতা রেখে গাছের উপরিভাগের বাকলসহ অপ্রয়োজনীয় অংশ পরিষ্কার করতেন। আড়াআড়িভাবে বাঁধা বাঁশের দণ্ডে দাঁড়িয়ে কোমরে ও গাছে রশি পেঁচিয়ে ধারালো দা দিয়ে গাছিদের গাছ কাটার দারুণ দৃশ্য এখন তেমন চোখে পড়ে না।

উপজেলার ধলিগৌর নগর ইউনিয়নের প্রয়াত হাফেজ নুরনবী মিয়ার ছেলে জিহাদুল ইসলাম জানান, তিনি তার বাবাকে রস সংগ্রহ করতে দেখেছেন সেই ছোটবেলা থেকেই। তখন প্রচুর রস আসত বাড়িতে। খেজুরের গুড়ের গন্ধে মৌ মৌ করতে পুরো বাড়ি। কিন্তু বর্তমানে গাছের সংখ্যা একেবারেই কমে গেছে। একসময় তারা কয়েকশ’ খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করতেন। কিন্তু এ বছর মাত্র ২০-২৫টি গাছ থেকে রস সংগ্রহ করছে। প্রতিটি গাছ থেকে দৈনিক ৪-৫ কেজি রস বের হয়। কাঁচা রস বিক্রি করা হয় প্রতি কেজি ১০০-১৫০ টাকা।

প্রায় ২০ বছর ধরে রস সংগ্রহ করে আসছেন লালমোহন উপজেলার কুন্ডের হাওলা গ্রামের নাসির উদ্দিন। তিনি জানান, সাধারণত একটি খেজুর গাছের রসের উপযুক্ত হতে প্রায় ৫-১০ বছর সময় লেগে যায়। আর একটি গাছ থেকে রস পাওয়া যায় ২০-২৫ বছর পর্যন্ত। তবে প্রতিটি গাছে কী পরিমাণ রস পাওয়া যাবে, তা নির্ভর করে গাছির দক্ষতা এবং গাছের উপর।

স্থানীয়রা জানান, আগে শীত এলে সহজেই মিলতো খেজুরের রস। কিন্তু এখন সারা গ্রাম খুঁজেও কোথাও খেজুরের গাছ বা গাছি কারও সন্ধান পাওয়া যায় না।