নিজ বাড়ীতে ওঠার দাবি, শশুর দেবর কর্তৃক মারপিটের শিকারের প্রতিবাদ ও থানার এসআই গোপাল চন্দ্র কর্তৃক অসদাচরণের প্রতিবাদে শাহজাদপুর পৌর সদরের কান্দাপাড়া গ্রামের মরহুম আব্দুর রউফের স্ত্রী ছালেহা খাতুন সংবাদ সম্মেলন করেছে।
বুধবার রাতে দেওয়ান পাড়া ভাড়া বাসায় সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী ছালেহা খাতুন বলেন, আমার স্বামীর পরিবারের অন্য সদস্যরা ব্যাংকে জায়গা বন্ধক রেখে ঋন গ্রহন করে সে ঋন পরিশোধ করতে ব্যার্থ হয়।তখন ব্যাংক চাপ প্রয়োগ করলে আমার শশুর শাশুরি সম্মানের ভয়ে আমার স্বামীকে বলে তুই ব্যাংকের ঋন শোধ করে দিয়ে তুই এই জায়গাটা তোর নামে রেজিষ্ট্রি করে নে।তখন আমার স্বামীর জুলুম হওয়ার পরেও অনেক কষ্ট করে ব্যাংকের ঋন শোধ করে এবং ওই সম্পত্তি আমার শশুর আমার স্বামীর নামে লিখে দেয়।এর পর গত ২৪ নভেম্বর ২০২০ ইং সালে আমার স্বামী মারা যায়।মারা যাওয়ার পর আমি সন্তানদের নিয়ে আমার স্বামীর বাড়িতে উঠতে গেলে আমার শশুর শাশুরি এবং আমার দেবর এসএম শামিম মিলে আমাকে বাড়িতে উঠতে দেয়নি এবং আমাকে মারপিট করে বের করে দেয়। এরপর আমি আমার দুই সন্তান নিয়ে বাসা ভাড়া থাকি।আমার পক্ষে বাসা ভাড়া দিয়ে থাকার মতো পরিস্থিতি নাই।
পরবর্তীতে নারী সংগঠন নবদিগন্ত মহিলা উন্নয়ন সংস্থা রাজশাহীর পক্ষ থেকে বিষয়টি মিমাংসা করার জন্য আমার দেবর এসএম শামিমকে নোটিশ করে।কিন্তু দফায় দফায় এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং জনপ্রতিনিধি একাধিকবার মিমাংসার জন্য বসেও সমাধানে ব্যার্থ হন।এরপর আমি শাহজাদপুর থানায় চলতি বছরের জুন মাসের ৩ তারিখে একটি অভিযোগ দায়ের করি কিন্তু তেমন কোন ফল পাইনি।ওসি সাহেব এসএম শামিম সহ দুপক্ষকে নিয়ে তার অফিসেই বসার ব্যাবস্থা করেন।এসময় এসএম শামিম বাড়ি ছেড়ে দিবেন মর্মে ১৫ দিনের সময় নেন।কিন্তু শামিম পরে আর বাড়ী ছেড়ে দেননি এবং বাড়িতে আমাদের উঠতেও দেয়নি।আমি অসহায়ের মতো দুটি সন্তানকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকি।আমি গত ২৫.০৯.২৩ ইং তারিখে আনুমানিক সন্ধ্যা ৭ ঘটিকার দিকে আমার এতিম বাচ্চাদের নিয়ে আমার স্বামীর বাড়িতে গেলে আমার শশুর নঈম উদ্দিন সরকার, আমার দেবর শামিমের নেতৃত্বে কয়েজন মিলে আমাকে এবং আমার সন্তানদের বেদম মারপিট করে।এসময় আমি এবং আমার সন্তানরা প্রান বাঁচানোর জন্য দৌড়ে পাশের বাড়িতে আশ্রয় নেই এবং ৯৯৯ এ ফোন দেই।পরে শাহজাদপুর থানার এসআই গোপাল চন্দ্র ঘটনাস্থলে গেলে আমরা প্রান নিয়ে কোনরকমে ওখান থেকে বের হয়ে চিকিৎসা নিতে যাই।চিকিৎসা নিয়ে পরে আনুমানিক রাত দেড়টার দিকে থানায় হাজীর হই।
এসময় এসআই গোপাল বলেন, জায়গা জমির বিষয় এতো বড় একটা ঘটনা অনেক টাকা পয়সা খরচ হবে।আমি বললাম আমি এতো টাকা পাবো কোথায়?
তখন এসআই গোপাল চন্দ্র বলেন, এ অভিযোগ নেওয়া যাবে না বরং শামিম আপনাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলে সেটা নিতে হবে আমাদের।এসআই গোপাল চন্দ্রের এমন আচরণে আমি হতাশ হই।আইনের লোক হয়ে তিনি এমন বেআইনি কথাবার্তা কিভাবে বলতে পারলেন।
তিনি অপরপক্ষের নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়েছে বলে আমার মনে হয়।তিনি যেকোন সময় আমার এবং আমার সন্তানদের ক্ষতি করতে পারে।শামিমের পাশাপাশি এসআই গোপালেরও বিচার চাই।ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য সাংবাদিক ভাইয়েরা পাশে থাকবেন আশা করি।আমি নিরুপায় হয়ে আপনাদের সাহায্য কামনা করছি।আপনাদের কাছে জোর দাবি জানাই, আমার অবুঝ দুটি সন্তানকে যারা মারপিট করেছে তাদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করে ন্যায়বিচার পাওয়ায় সহযোগিতা করবেন।আমার শশুরের কাছ থেকে যে বাড়িটি আমার স্বামী কিনে নেয় সেই বাড়িটিই আমার দেবর শামিম নিজের দাবি করে আমাকে এবং আমার সন্তানদের বাড়িতে উঠতে দিচ্ছে না।আমার দেবর শামিম যে ওসুধের দোকান নিয়ে কর্ম করে খাচ্ছে সে দোকানটির সমস্ত টাকা পয়সাও আমার স্বামীর।আমার শশুর শাশুরির ভাগের যে জায়গাটুকু অবশিস্ট ছিলো সেটাও আমার বাচ্চাদের হক নষ্ট করে আমার দেবর শামিমের নামে লিখে দেয় আমার শশুর শাশুরি।
আমি এসমস্ত বিষয়ে সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যেন আমার ন্যায় বিচার পাওয়ার পথটি সৃষ্টি হয়।
এবিষয়ে, এসআই গোপাল চন্দ্রর সাথে কথা হলে তিনি সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন।
এব্যাপারে, অফিসার ইনচার্জ নজরুল ইসলাম মৃধা বলেন, এসআই গোপাল যদি এধরণের আচরণ করে থাকে তদন্ত করে প্রমাণ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ নিহাল খান
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নিয়ম মেনে তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিবন্ধনের জন্য আবেদিত।