শালিখায় বীজতলা তৈরি ও চারা রোপনে ব্যস্ত কৃষক-কৃষাণী,কুয়াশা নিয়ে শঙ্কা

- আপডেট সময় : ০৩:১৩:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৩ ১৭০ বার পড়া হয়েছে

কুয়াশায় ঢাকা চারিদিক,বেলা বাড়ার সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে কুয়াশা সাথে শৈত্য প্রবাহ। তাইতো অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। তবে রিজিকের টানে শ্রমজীবী মানুষগুলো ছুটে যাচ্ছেন তাদের কর্মস্থলে।
শীতকে উপেক্ষা করে সরিষা উঠানোর সাথে সাথেই রোরো ধানের বীজতলা তৈরি ও চারা রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন শালিখার কৃষক- কৃষাণি। কাজকে বেগবান করতে কৃষকের পাশাপাশি মাঠের কাজে অংশ নিচ্ছেন কৃষাণীরাও।
উপজেলার বুনাগাতি, শতখালি, শালিখা, তালখড়ি সহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে করে দেখা যায়, বেলা উঠার আগেই কৃষকরা দলে দলে মাথায় মাথাল, হাতে কাস্তে-কোদাল এবং সাথে দুপুরের খাবার নিয়ে ছুটে চলেছেন মাঠের দিকে। কেউ উঠাচ্ছেন সরিষা, কেউ লাগাচ্ছেন ধানের চারা কেউ আবার বীজতলা তৈরিতে ব্যস্ত। অনেকে আবার বীজতলা থেকে ধানের চারা উঠানোর কাজে ব্যস্ত।
তবে মাত্রাতিরিক্ত কুয়াশায় ধানের চারা গুলোর ক্ষতির শঙ্কায় অনেকের কপালে চিন্তার ভাঁজ। তারপরও মাঠ প্রস্তুত করছেন অনেকেই কনকনে ঠান্ডাকে উপেক্ষা করে পানি কাদায় নেমে জীবন যুদ্ধে লড়ছেন তারা। শত কষ্টের মাঝেও সোনালী ফসল ফলানোর স্বপ্নে বিভোর তারা।
এমনই একজন কৃষক শালিখা উপজেলার আড়পাড়া ইউনিয়নের পুকুরিয়া গ্রামের নজরুল মোল্লা। তিনি বলেন, এ বছর ৩ একর জমিতে সরিষা বুনে ছিলাম সরিষা আলহামদুলিল্লাহ আশানুরূপ হয়েছে। এছাড়াও ৯ একর জমিতে বোরো ধান রোপণের চিন্তাও রয়েছে তার।
তালখড়ি ইউনিয়নের শাবলাট গ্রামের কৃষক শামস বলেন, ৮ বিঘা জমিতে বোরো ধান লাগানোর প্রস্তুতি নিয়েছি প্রাকৃতিক বিপর্যয় না হলে কাঙ্খিত ফসল ঘরে তুলতে সক্ষম হব।
তবে জয়নাল মোল্লা, শিপন বিশ্বাস, হরিদাস সহ কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা বললে তারা জানান, এবছরের অন্যান্য বছরের তুলনায় অতিমাত্রায় কুয়াশা পড়ছে যা বীজতলার চারা ও সদ্য রোপনকৃত ধানের জন্য খুবই ক্ষতিকর এভাবে আরো কয়েকদিন কুয়াশা পড়লে বোরো আবাদ থেকে কাঙ্ক্ষিত ফসল ফলানো অসম্ভব হয়ে পড়বে।
আড়পাড়া ইউনিয়নের বরইচারা গ্রামের কৃষক হরিদাস বিশ্বাস বলেন, এ বছর ৬ বিঘা জমিতে বোরোধান রোপনের লক্ষ্যে বীজতলা তৈরি করেছিলাম যার প্রায় অর্ধেক কুয়াশায় নষ্ট হয়ে গেছে। তাই নতুন করে ধানের চারা(পাতো) ক্রয় করতে যাচ্ছি।
অতিমাত্রায় কুয়াশা থেকে ধানের চারা কিভাবে রক্ষা করা যায় এমন প্রশ্নের জবাবে উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা সঞ্জয় হালদার বলেন, শৈত্য প্রবাহের সময় বীজতলা তৈরি করা থেকে বিরত থাকা উত্তম। তারপরও যারা বীজতলা তৈরি করেছেন তাদেরকে দিনের বেলায় বীজতলা স্বচ্ছ পলিথিন দ্বারা আবৃত করে রাখা এবং বীজতলায় পানি কম রাখা।এছাড়াও বীজতলায় এক লিটার পানিতে ২ গ্রাম চ্যাম্পিয়ন-১ ছত্রাকনাশক ঔষধ প্রয়োগের অনুরোধ করেন তিনি এবং সদ্য রোপনকৃত চারা গাছে ইউরিয়া সার প্রয়োগ করা থেকে বিরত থাকার পরামর্শও দেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আলমগীর হোসেন বলেন,এ বছর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১২ হাজার ৫ শত ৪৫ হেক্টর জমিতে যার মধ্যে ৫ হাজার ৮ শত ৫০ হেক্টর জমিতে ধান রোপন করা হয়েছে যা মোট লক্ষ্যমাত্রার ৪৬ শতাংশ।এছাড়াও তিনি ধানের চারা ও বীজতলা তৈরিতে যে কোন পরামর্শের জন্য উপজেলা কৃষি বিভাগের সাথে যোগাযোগের অনুরোধ জানান ।