চলতি মৌসুমে ঠাকুরগাঁওয়ে মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে।জেলার হাট-বাজারগুলোতে উঠতে শুরু করেছে কাঁচা ও পাকা মরিচ।এছাড়া মরিচের ভালো দাম পেয়ে কৃষকের মুখেও ফুটছে হাসি।
জেলা শহরের হাট-বাজারগুলোয় উঠতে শুরু করেছে কাঁচা ও পাকা মরিচ।মরিচের দাম ভালো পেয়ে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।
সরেজমিনে হাট বাজারগুলোতে গিয়ে জানা যায়, ঠাকুরগাঁওয়ে রুহিয়া রেলস্টেশনসহ প্রতিটি রেললাইনে এখন লাল মরিচের গালিচা।কাচা মরিচ শুকিয়ে বাজারজাত করলে বাড়তি দাম পাওয়া যায় বলে লাইনের শুকনো মাটির ওপর পাটি ও প্লাস্টিকের চট বিছিয়ে শুকাতে দেওয়া হচ্ছে লাল মরিচ।
এই রেল গেইটের দুই পাশ্বে এলাকায় প্রতিদিন কয়েকটি এলাকার চাষিরা মরিচ শুকাতে আসেন।এখান থেকেই মরিচ পাইকারি দরে কিনে নেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
স্থানীয় ব্যবসায়ী আব্দুল আলিম বলেন, ‘প্রতিদিন এই স্টেশন গেট এলাকা থেকে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকার শুকনা মরিচ ক্রয় বিক্রয় করা হয়।’
আসমত আলী নামে এক কৃষক জানান, ১ বিঘা জমিতে বিন্দু ও বাঁশগাড়া জাতের মরিচ চাষ করেছেন।তিনি আরো বলেন, ‘নিড়ানি, সেচ ও পরিচর্যা পর্যন্ত ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।মরিচ উৎপাদন হচ্ছে কমপক্ষে ১০ মণ।এবার প্রতি মণ মরিচ ১৫ হাজার টাকা দরে বিক্রি করে বিঘাপ্রতি প্রায় দেড় লাখ টাকা পাওয়া যাবে।’
কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এবার আবহাওয়া ভালো থাকায় মরিচের ফলন আশানুরূপ হয়েছে।দামও পাওয়া যাচ্ছে ভালো।এ রেল গেইট এলাকার প্রায় ৭০ ভাগ কৃষকই মরিচ চাষের সঙ্গে যুক্ত।আমি ২ বিঘা জমিতে চাষ করেছি।১ লাখ টাকা খরচ হলেও লাভ থাকবে প্রায় ৩ লাখ টাকা।’
সমসের নামে এক কৃষক বলেন, ‘পৌষ মাসে চারা রোপণ করার পর থেকে উৎপাদন পর্যন্ত প্রায় ৬ মাস প্রয়োজন।বিন্দু, সেকা, মাশকারা, মল্লিকাসহ বিভিন্ন জাতের মরিচ হয় এ এলাকায়।’
এদিকে, খেতে মরিচ সংগ্রহ কাজে শিশু-কিশোর পাশাপাশি পরিবারের বয়স্ক সদস্যরাও এতে যোগ দেন।প্রতিটি মরিচের ঝুড়ি ভর্তি হলে ২৫ থেকে ৩০ টাকা হিসেবে দিনে আয় করছেন কমপক্ষে ২শ’ থেকে ২৫০ টাকা।
ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক আলমগীর হোসেন জানান, ‘এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মরিচের ফলন ভালো হয়েছে।কৃষকেরা বেশ লাভবান হচ্ছেন।চলতি মৌসুমে জেলায় ২ হাজার ২২৩ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ হয়েছে।যা থেকে প্রায় ১৬৩ কোটি টাকার শুকনা মরিচ উৎপাদিত হবে।’