ঢাকা ০৬:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০১ জুন ২০২৩, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
বিশেষ বিজ্ঞপ্তি ::
দেশের জনপ্রিয় সর্বাধুনিক নিয়ম-নীতি অনুসরণকৃত রাজশাহী কর্তৃক প্রকাশিত নতুনধারার অনলাইন নিউজ পোর্টাল 'যমুনা প্রতিদিন ডট কম' এ আপনাকে স্বাগতম...
সংবাদ শিরোনাম ::
আনোয়ারায় চুরি ঠেকাতে রাত জেগে পাহারা দেন ইউপি সদস্য মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন ঠাকুরগাঁওয়ে বিশ্ব দুগ্ধ দিবস পালন উপলক্ষ্যে আলোচনা ও পুরস্কার বিতরণ নন্দীগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের উন্মুক্ত বাজেট ঘোষণা কবিতা: হেড স্যার একযুগ পর মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অপারেশন থিয়েটার চালু,প্রসুতি ময়নার সফল সিজার রায়গঞ্জে কাবিখা প্রকল্পে নাম মাত্র মাটি কর্তন করে সিংহভাগ টাকা হরিলুটের পাঁয়তারা রায়গঞ্জের শালিয়াগাড়ী মেলায় ইজারাদারদের দাপটে দোকানদাররা জিম্মি শার্শার সীমান্তে ১৪টি সোনার বার উদ্ধার সুনামগঞ্জ পৌরসভায় বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস পালিত চলচ্চিত্রে নতুন নায়িকা পারিশা

জীবন যুদ্ধে হার না মানা সাতক্ষীরার শ্যামল শীল

নিজস্ব প্রতিবেদক :
  • আপডেট সময় : ১১:৪৬:৪৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ মে ২০২৩ ৭৭ বার পড়া হয়েছে
যমুনা প্রতিদিন অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

জীবন যুদ্ধের শুরু টা ছিল ২০১৬ সাল।শ্যামল শীল সাতক্ষীরা আশাশুনি উপজেলার নাটানা গ্রামের বাসিন্দা।পরিবারে ছিল মা, বাবা, ভাই ও ঠাকুমা।তার পিতা পেশায় ছিলেন একজন দিনমজুর।পরিবারের প্রধান ছিলেন তার পিতা।তার পিতার মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল মাত্র ৫ শতক।

২ ভাইয়ের পড়াশুনা বাবদ ও পরিবারের সকল খরচ তার পিতার একার পক্ষে যোগাড় করা খুবই ছিল কষ্ট সাধ্য।এ জন্য শ্যামলের মাতা তার পিতার সহিত বাইরে অন্যের জমিতে কাজ করত।এভাবে ধীরে ধীরে তাদের পড়াশুনা ও পরিবারের খরচ বহন করত।২ ভাইয়ের ভিতর বয়সের পার্থক্য ছিল ৪ বছরের মত।

শ্যামল শীল ২০১৪ সালে এইচ,এন,এস,কে,টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি তে ভালো ফলাফল করেন।শ্যামল শীল ২০১৬ সালে আশাশুনি সরকারী কলেজ থেকে এইচএসসি তে আশানুরূপ ফলাফল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য সাতক্ষীরা প্যারাগন এডমিশন কোচিং এ ভর্তি হন।

তার পিতার ইচ্ছা ছিল একদিন তার ছেলে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করবে।তার পিতা নিজ পরিবার ও শ্যামলের সকল খরচ বহন করেন।

অবশেষে শ্যামল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৭০ হাজার ছাত্র-ছাত্রীর ভিতর শ্যামল শীল ৯৮০ মেরিট লিস্ট ও ৬৪.১৪ স্কোর নিয়ে তিনি ইতিহাসে চান্স পান।এখান থেকে শ্যামল শীলের জীবন যুদ্ধের শুরু।অনেক কষ্ট করে তার পিতা চড়া সুদে লোন নিয়ে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করে।

এদিকে শ্যামলের পরিবারে অভাব এর তাড়নায় পরিনত হয়।অন্যদিকে শ্যামলের ভবিষ্যতে অন্য দিকে পরিবার।শ্যামল ঢাকায় থাকাকালীন টিউশন এর মাধ্যমে নিজের খরচ বহন করেন।পরিবারের অভাব এর তাড়নায় শ্যামল শীল লেখা পড়ার পাশাপাশি সাভার গার্মেন্টস এ চাকরি, যে কোন পার্ট টাইম, ফুল টাইম জব, কখনো লক্ষী বাজার, রায়সাহের বাজারে সবজির ব্যবসা করে নিজ খরচ ও পরিবারের নামের চাকাটা ঘুরছিল।

এ দিকে শ্যামলের পিতা স্বপ্ন দেখে তার ছেলে চাকরি পেয়ে সংসারের হাল ধরবে।কিন্তু হঠাত যেন শ্যামলের পিতার সে স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যেতে লাগল।২০২১ সালের নভেম্বর মাসে শ্যামলের পিতা ব্রােইন টিউমারের আক্রান্ত হন।তখন শ্যামলের পরিবারে খুবই কষ্ট দেখা দেয়।এমনত অবস্থায় শ্যামলের উপর সব চাপ এসে পড়ে।যেখানে পিতা-মাতার উর্পাজনে সংসার নামক চাকাটি ঘুরতে না।সেখানে শ্যামলের পিতা অসুস্থ হওয়ার পর সেই পরিবারটি ধবংশের মুখে পতিত হয়।এমনত অবস্থায় শ্যামল অন্যের দ্বারস্থ হয়।মানুষের সাহায্য নিয়ে পিতার চিকিৎসা করান।

হঠাৎ শ্যামলের পিতা ইহলোক ছেড়ে পরলোকগমন করেন (২০২১ সালের ৭ ই জুলাই)।তখন পরিবারে শোকের ছায়া নেমে আসে।সাথে অভাব অনটনে পরিবারটি চলত থাকে।কিম্তু শ্যামলের জীবন যুদ্ধে কঠিন বাস্তবতা কে মেনে নিয়ে এগিয়ে যায়।তার পরিবারে এমন শোচনীয় অবস্হা হবে তা ত কল্পনাতীত।

শ্যামলের ভাই স্বপন শীল খুবই ভদ্র।স্বপন পরিবারের অভাব দেখে তিনি পিতার ন্যায় বাইরে কাজ করতে যান।এভাবে চলছে শ্যামলের পরিবার।

শ্যামল তার জায়গা থেকে বিন্দমাত্র বিচলিত হননি।তিনি সাহস নিয়ে কঠিন বাস্তবতা অতিক্রম করেন।শ্যামল কঠিন বাস্তবতার কাছে নিজেকে বিলিয়ে দেন।শ্যামল বাস্তবতার কষা ঘাতে হয়ে ওঠে বাস্তবাদী।

২০২২ সালে ৩১ ডিসেম্বর শ্যামলের ঠাকুরমা ইহলোকে ছেড়ে পরলোক গমন করেন।এভাবে একের পর এক শ্যামলের পরিবার পতনের পথে ধাবিত হয়।কিন্তুু শ্যামল তার পরিবার কে বাঁচাতে মানুষের শরনাপন্ন হয়।এভাবে শ্যামল তার পরিবার কে বাঁচিয়ে রাখছে।২০১৬ থেকে বর্তমান ২০২৩ সাল তিনি এখনো পরিবারের জন্য কঠোর পরিশ্রম করছে।

তাই আমারা শ্যামলের ভবিষ্যতে কামনা করি।সে যেন ভালে কিছু করতে পারে।শ্যামল যেন ভালো কিছু করার মাধ্যমে দেশ ও জনগনের কল্যানে আসে।সাতক্ষীরাবাসীর পক্ষ থেকে তার মঙ্গল কামনা করি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

জীবন যুদ্ধে হার না মানা সাতক্ষীরার শ্যামল শীল

আপডেট সময় : ১১:৪৬:৪৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ মে ২০২৩

জীবন যুদ্ধের শুরু টা ছিল ২০১৬ সাল।শ্যামল শীল সাতক্ষীরা আশাশুনি উপজেলার নাটানা গ্রামের বাসিন্দা।পরিবারে ছিল মা, বাবা, ভাই ও ঠাকুমা।তার পিতা পেশায় ছিলেন একজন দিনমজুর।পরিবারের প্রধান ছিলেন তার পিতা।তার পিতার মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল মাত্র ৫ শতক।

২ ভাইয়ের পড়াশুনা বাবদ ও পরিবারের সকল খরচ তার পিতার একার পক্ষে যোগাড় করা খুবই ছিল কষ্ট সাধ্য।এ জন্য শ্যামলের মাতা তার পিতার সহিত বাইরে অন্যের জমিতে কাজ করত।এভাবে ধীরে ধীরে তাদের পড়াশুনা ও পরিবারের খরচ বহন করত।২ ভাইয়ের ভিতর বয়সের পার্থক্য ছিল ৪ বছরের মত।

শ্যামল শীল ২০১৪ সালে এইচ,এন,এস,কে,টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি তে ভালো ফলাফল করেন।শ্যামল শীল ২০১৬ সালে আশাশুনি সরকারী কলেজ থেকে এইচএসসি তে আশানুরূপ ফলাফল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য সাতক্ষীরা প্যারাগন এডমিশন কোচিং এ ভর্তি হন।

তার পিতার ইচ্ছা ছিল একদিন তার ছেলে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করবে।তার পিতা নিজ পরিবার ও শ্যামলের সকল খরচ বহন করেন।

অবশেষে শ্যামল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৭০ হাজার ছাত্র-ছাত্রীর ভিতর শ্যামল শীল ৯৮০ মেরিট লিস্ট ও ৬৪.১৪ স্কোর নিয়ে তিনি ইতিহাসে চান্স পান।এখান থেকে শ্যামল শীলের জীবন যুদ্ধের শুরু।অনেক কষ্ট করে তার পিতা চড়া সুদে লোন নিয়ে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করে।

এদিকে শ্যামলের পরিবারে অভাব এর তাড়নায় পরিনত হয়।অন্যদিকে শ্যামলের ভবিষ্যতে অন্য দিকে পরিবার।শ্যামল ঢাকায় থাকাকালীন টিউশন এর মাধ্যমে নিজের খরচ বহন করেন।পরিবারের অভাব এর তাড়নায় শ্যামল শীল লেখা পড়ার পাশাপাশি সাভার গার্মেন্টস এ চাকরি, যে কোন পার্ট টাইম, ফুল টাইম জব, কখনো লক্ষী বাজার, রায়সাহের বাজারে সবজির ব্যবসা করে নিজ খরচ ও পরিবারের নামের চাকাটা ঘুরছিল।

এ দিকে শ্যামলের পিতা স্বপ্ন দেখে তার ছেলে চাকরি পেয়ে সংসারের হাল ধরবে।কিন্তু হঠাত যেন শ্যামলের পিতার সে স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যেতে লাগল।২০২১ সালের নভেম্বর মাসে শ্যামলের পিতা ব্রােইন টিউমারের আক্রান্ত হন।তখন শ্যামলের পরিবারে খুবই কষ্ট দেখা দেয়।এমনত অবস্থায় শ্যামলের উপর সব চাপ এসে পড়ে।যেখানে পিতা-মাতার উর্পাজনে সংসার নামক চাকাটি ঘুরতে না।সেখানে শ্যামলের পিতা অসুস্থ হওয়ার পর সেই পরিবারটি ধবংশের মুখে পতিত হয়।এমনত অবস্থায় শ্যামল অন্যের দ্বারস্থ হয়।মানুষের সাহায্য নিয়ে পিতার চিকিৎসা করান।

হঠাৎ শ্যামলের পিতা ইহলোক ছেড়ে পরলোকগমন করেন (২০২১ সালের ৭ ই জুলাই)।তখন পরিবারে শোকের ছায়া নেমে আসে।সাথে অভাব অনটনে পরিবারটি চলত থাকে।কিম্তু শ্যামলের জীবন যুদ্ধে কঠিন বাস্তবতা কে মেনে নিয়ে এগিয়ে যায়।তার পরিবারে এমন শোচনীয় অবস্হা হবে তা ত কল্পনাতীত।

শ্যামলের ভাই স্বপন শীল খুবই ভদ্র।স্বপন পরিবারের অভাব দেখে তিনি পিতার ন্যায় বাইরে কাজ করতে যান।এভাবে চলছে শ্যামলের পরিবার।

শ্যামল তার জায়গা থেকে বিন্দমাত্র বিচলিত হননি।তিনি সাহস নিয়ে কঠিন বাস্তবতা অতিক্রম করেন।শ্যামল কঠিন বাস্তবতার কাছে নিজেকে বিলিয়ে দেন।শ্যামল বাস্তবতার কষা ঘাতে হয়ে ওঠে বাস্তবাদী।

২০২২ সালে ৩১ ডিসেম্বর শ্যামলের ঠাকুরমা ইহলোকে ছেড়ে পরলোক গমন করেন।এভাবে একের পর এক শ্যামলের পরিবার পতনের পথে ধাবিত হয়।কিন্তুু শ্যামল তার পরিবার কে বাঁচাতে মানুষের শরনাপন্ন হয়।এভাবে শ্যামল তার পরিবার কে বাঁচিয়ে রাখছে।২০১৬ থেকে বর্তমান ২০২৩ সাল তিনি এখনো পরিবারের জন্য কঠোর পরিশ্রম করছে।

তাই আমারা শ্যামলের ভবিষ্যতে কামনা করি।সে যেন ভালে কিছু করতে পারে।শ্যামল যেন ভালো কিছু করার মাধ্যমে দেশ ও জনগনের কল্যানে আসে।সাতক্ষীরাবাসীর পক্ষ থেকে তার মঙ্গল কামনা করি।