তিস্তা নদীর পাড়ে
মোঃ জাবেদুল ইসলাম
বন্ধু, সোনা মিয়ার বাড়ি,
তিস্তা নদীর পাড়ে।
প্রতি বছর ছোবল মারে
বন্যা সর্বনাশে।
বন্ধু, সোনার তিস্তা পাড়ে,
দুটি কুঁড়ে ঘর।
একটাতে রাধে বারে,
অন্যটাতে ঘুমায়।
বউ বাচ্চা নিয়ে সোনার,
কষ্টে কাটে দিন।
রাতের বেলা ঘুমাতে গেলে,
আসে না চোখে নিন।
মাঘের শীতে একটু খানি,
গামছা পড়ে সোনা।
ডুব দিয়ে পাথর তুলে,
পানি বরপ ঠান্ডা।
কখনো তুলে পাথর সোনা,
কখনো ধরে মাছ।
অতি কষ্টে জীবন সোনার,
কাটে বারো মাস।
ফসলি ছিল তিনখান ভুঁই,
তিস্তার অই পাড়ে।
ধান পাট ভুট্টা ফলায় সোনা
শাক সবজি পুঁই।
পাশের চরে মন্টু মিয়ার
রুপালী একটি মেয়ে।
সারা দেহে এতো রূপ তাঁর,
চোখ পড়ে না ফিরে।
রূপালীরে একদিন সোনা,
আসলো নিয়ে ঘরে।
সুখের সংসার গড়বে সোনা
আশা নিয়ে অরে।
সুখে অনেক দিন কেটে যায়,
সোনা, রূপালীর।
একদিন হঠাৎ গভীর রাতে,
শুনি কোলাহল।
তিস্তা নদীর করাল গ্রাসে,
ভাসিয়ে গেল সব।
সাতরে কেবল জীবন বাঁচায়,
রূপালী আর সোনা।
এ’পাড়েতে তারা দু’জন,
বাঁধলো সুখের ঘর।
কাজ কর্ম নেইতো কোথাও
হয় না উপার্জন।
কাজের খোঁজে যেতে হয়,
সুদুর ঢাকা শহর।
সেখানেতেও মেলে না কাজ,
জ্বালা দুঃ বিসহ।
তিস্তা পাড়ে বহু জমি,
পড়ে আছে পতিত।
এখানেতে ইপিজেড, পর্যটন,
প্রজেক্ট, হতো যদি অধিক।
পাঁচটি জেলার ভিতর দিয়ে
তিস্তা বয়ে গেছে।
লক্ষ কোটি একর জমি,
তিস্তা ধরে আছে।
তোমরা যায়া আছো বসে,
নদী কমিশনে।
তিস্তা নদী কর খনন,
করমো বাড়াও মোদের।
সংসদে আছেন যারা,
এমপি, মিনিস্টার।
তিস্তা নদীর আলোচনা,
করো বার বার।
এই নিবেদন করছি আমি,
বসে তিস্তা নদীর পাড়ে।