শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১১:০৩ পূর্বাহ্ন
নোটিশ :
দেশের জনপ্রিয় সর্বাধুনিক নিয়ম-নীতি অনুসরণকৃত রাজশাহী কর্তৃক প্রকাশিত নতুনধারার অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘যমুনা প্রতিদিন ডট কম’

নিউক্লিয়ার ক্লাবে যুক্ত হলো তুরস্ক,পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য প্রথম জ্বালানী পেলো দেশটি

শীঘ্রই পারমাণবিক বিদ্যুৎ পেতে চলেছে তুরস্ক।বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) এক আড়ম্বড়পুর্ণ অনুষ্ঠানে দেশটি তাদের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র আকুইয়ু এনপিপির জন্য প্রয়োজনীয় পারমাণবিক জ্বালানীর প্রথম ব্যাচটি গ্রহণ করেছে।এর মাধ্যমে তুরস্ক পারমাণবিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী দেশগুলোর কাতারে যুক্ত হওয়ার একেবারেই দ্বারপ্রান্তে পৌছেছে। রসাটমের গণমাধ্যম শাখা এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এখবর জানিয়েছে।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ এরদোগা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যোগদান করেন।আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি এজেন্সী (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রসি, তুরস্কের এনার্জী ও প্রাকৃতিক সম্পদ বিষয়ক মন্ত্রী ফাতিহ ডোনমেজ, রুশ রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি কর্পোরেশন রসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ, আকুইয়ু নিউক্লিয়ারের প্রধান নির্বাহী আনাস্তাসিয়া জোতিয়েভাসহ বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

রাশিয়া এবং তুরস্কের শীর্ষ নেতারা পারমাণবিক জ্বালানীর প্রথম ব্যাচের ডেলিভারি সংক্রান্ত প্রতিকী অনুমোদন প্রদান করেন। এরপর, ফুয়েল এসেম্বলীগুলোকে ফ্রেশ ফুয়েল সংরক্ষণ স্থাপনায় নিয়ে যাওয়া হয়।

রসাটম মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ তুর্কী এনার্জী ও প্রাকৃতিক সম্পদ মন্ত্রীকে এ মর্মে একটি সনদপত্র হস্তান্তর করেন যে, সকল নিরাপত্তা স্ট্যান্ডার্ড ও চাহিদা পূরণ করে জ্বালানী ডেলিভারি করা হয়েছে।

গুলনার ডিস্ট্রিকটের তিন প্রজন্ম প্রতিনিধিত্বকারী- প্রবীন প্রজন্মের একজন, তার স্কুলগামী দৌহিত্র, এবং একজন তরুন নিউক্লিয়ার প্রকৌশলী আকুইয়ু এনপিপি সাইটে শান্তিপূর্ণ এটম ফ্লাগ উত্তোলন করেন।এর মাধ্যমে নিজস্ব দেশে পরমাণু প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী দেশগুলোর তালিকায় তুরস্কের অন্তর্ভূক্তি ঘোষিত হলো।

আলেক্সি লিখাচেভ বলেন, “তুরস্কে প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সত্যিকার অর্থেই একটি যৌথ প্রয়াস। চার শতাধিক তুর্কী প্রতিষ্ঠান এতে অংশগ্রহণ করেন। এটা বলা যেতেই পারে যে, তুরস্ক ইতোমধ্যে নিজস্ব পারমাণবিক শিল্প কাস্টার স্থাপনে সমর্থ হয়েছে।আমাদের পারষ্পরিক সহযোগিতা থেকে অর্জিত অভিজ্ঞতা অন্যান্য প্রকল্পগুলোতে এই কাস্টারের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে সহায়ক হবে”।

ফাতিহ ডোনমেজ বলেন, “তুরস্ক এই আকুইয়ু এনপিপির স্বপ্ন গত পাঁচ দশকের অধিক সময় ধরে দেখে এসেছে। আজকে তুরস্কের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সাইটে প্রথম জ্বালানীর ডেলিভারি হলো, যা প্রকল্পটির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।এর মাধ্যমে ভবিষ্যতের দ্বার উন্মুক্ত হয়েছে”।

আইএইএ এর মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রসি বলেন, “পারমাণবিক শক্তি কল্যানের সাথে সাথে, বাড়তি দায়িত্বও বটে।প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতে এই প্রকল্পের শুরু থেকেই আইএইএ নিবিড়ভাবে এর সাথে যুক্ত রয়েছে।আজকের এই প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নের ফলে তুরস্ক আগামী একশ বছর এখান থেকে কীন এনার্জী পাবে।এখন থেকে প্রতিটি পদক্ষেপে আপনারা এভাবেই আইএইএ-এর ওপর আস্থা রাখতে পারেন।”

আকুইয়ু এনপিপির জন্য ডেলিভারিকৃত জ্বালানী এসেম্বলীগুলোকে নির্ধারিত সকল প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ফ্রেশ ফুয়েল সংরক্ষনাগারে রাখা হবে।বিদ্যুৎ প্রকল্পের ইউনিটটি জ্বালানী লোডিং-এর জন্য প্রস্তুত হওয়ার পর ফুয়েল এসেম্বলীগুলো রিয়্যাক্টরের ভেতর স্থাপন করা হবে।

আকুইয়ু প্রকল্পের শতভাগ মালিকানা রসাটমের, তবে আন্তঃসরকারী চুক্তি অনুযায়ী এর সর্বোচ্চ ৪৯ ভাগ একক বিনিয়োগকারী বা কয়েকটি কোম্পানির নিকট বিক্রী করা যাবে।আকুইয়ু প্রকল্পের প্রথম ইউনিটটি সকল নির্মাণ অথোরাইজেশন পাওয়ার সাত বছরের মধ্যে অর্থাৎ ২০২৫ সালে সম্পন্ন হবার কথা থাকলেও তুরস্ক প্রজাতন্ত্রের শতবার্ষিকীতে অর্থাৎ ২০২৩ সালেই এটির কমিশনিং করার লক্ষ্যে সকল পক্ষ সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালায়।

তুরস্কের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র আকুইয়ু এনপিপিতে মোট চারটি ইউনিট স্থাপন করা হচ্ছে।ইউনিটগুলোতে ব্যবহৃহ হচ্ছে ৩+ প্রজন্মের রুশ ভিভিইআর রিয়্যাক্টর।প্রতিটি ইউনিটের উৎপাদন ক্ষমতা ১,২০০ মেগাওয়াট।তুরস্কের মোট বিদ্যুৎ চাহিদার দশ ভাগ পুরন করতে সক্ষম হবে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি।প্রকৃতি সুরক্ষার কথা বিশেষভাবে বিবেচনা করে এই প্রকল্পটির নকশা প্রণয়ন করা হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen + 13 =


অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ

x