বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১:০৮ পূর্বাহ্ন
নোটিশ :
দেশের জনপ্রিয় সর্বাধুনিক নিয়ম-নীতি অনুসরণকৃত রাজশাহী কর্তৃক প্রকাশিত নতুনধারার অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘যমুনা প্রতিদিন ডট কম’

মেট্রোরেলে যুক্ত হোক পুরান ঢাকা

বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে ২০১৫ সালে প্রথম ঢাকায় আসা।পরবর্তীতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুযোগ পাওয়ায় ঢাকায় থাকা।দীর্ঘ সাত বছর ধরে পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে আছি।ঢাকায় আরও কিছু আত্মীয়-স্বজন রয়েছে।তাদের বারবার ক্যাম্পাসে ঘুরে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানালেও যানজটের এই শহরে আমার ক্যাম্পাসে আসতে অনিহা।

কারণ, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় রাজধানীর এক শেষ প্রান্ত সদরঘাট এলাকায় অবস্থিত। রাজধানীর অন্য যে কোন জায়গা থেকে ক্যাম্পাসে আসতে অথবা এই এলাকায় আসতে একজন ব্যক্তিকে ঢাকা শহরের প্রায় প্রধান সবগুলো যানজট পূর্ণ স্থান অতিক্রম করে আসতে হবে।

একজন ব্যক্তি যদি মিরপুর থেকে সদরঘাটে আসার পরিকল্পনা নেয়, তবে পাঁচ মিনিট পথ আধাঘন্টার বেশি অনুপাতে ধরেই তাকে বের হতে হয়। দেখা যাবে এই যাতায়াতের জন্যই পুরো দিনের সময় ব্যবহার করতে হবে।

আমার এই গল্পটার মত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোর হাজারও শিক্ষার্থীর গল্প গুলো হয়তো একই। পাশাপাশি যারা স্থায়ী বসবাস করেন অথবা ব্যবসায়িক গুরুত্বপূর্ণ এই এলাকায় থাকছেন তাদেরও জীবনের অন্যতম অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ যানজট।

আরেকটু ছোট উদাহরণ দেওয়া যায়। ধরলাম বিভাগের বন্ধুরা মিলে সদরঘাটের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বাস স্ট্যান্ড থেকে সাভারে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরতে যাওয়ার যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে কিছু শিক্ষার্থী।

জাহাঙ্গীরনগর এর বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে সকাল ১০টায় বাসে উঠে বসল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। তাদের বাসটি ক্যাম্পাস থেকে এক থেকে দু কিলোমিটার অতিক্রম করতেই অন্তত আধা ঘন্টা থেকে এক ঘন্টা সময় প্রয়োজন পড়বে। কারণ বাসটিকে অতিক্রম করতে হবে আদালত পাড়া, রায়ে সাহেব বাজার মোড় এবং তাঁতীবাজার মোড় সিগন্যাল। এরপর শুরু হবে গুলিস্তানের যানজট। যা বংশাল এলাকা থেকেই শুরু। গুলিস্তানের ফুলবাড়িয়া বাসস্ট্যান্ড পার হতে আরও এক থেকে আধা ঘন্টা সময় অর্থাৎ ধরা যায় ইতিমধ্যে তাদের এক থেকে দুই ঘন্টা সময় লেগে যাবে। এরপর শুধু গুলিস্তান পার হতে সময় লাগতে পারে আধা ঘন্টা থেকে এক ঘন্টা।

পরে পল্টন মোড থেকে হয়তো শাহবাগের আগ পর্যন্ত কিছুটা জ্যাম মুক্ত গতি থাকবে। এই পথ অতিক্রম করতে হয়তো পাঁচ মিনিট সময় লাগবে। এরপর যদি শাহবাগ মোড়ে যানজট তৈরি হয় তবে আরও আধা ঘন্টা। এরপর রয়েছে কাটাবন সাইন্সল্যাব পর্যন্ত কয়েকটি সিগন্যালের জ্যাম আর জ্যাম। জ্যাম পড়তে হবে আসাদগেট, কলেজগেট, শ্যামলী, গাবতলী এলাকায়। ঘুরতে গেলে রাজধানীর এই পথটি পাড়ি দিতেই তাদের দুপুর গড়িয়ে পড়বে।

ফিরতি পথেও একই বিরম্বনা। শিক্ষার্থীর দলটিকে যদি মিরপুর, গাজীপুর বা অন্য কোথাও যেতে চায় একই যানজটে পড়তে হবে। শুধু শিক্ষার্থীরা না অন্য যে কেউ আসলেও তাদের জন্য একই বিড়ম্বনা।

রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় দেশের প্রধান নদী বন্দর অবস্থিত। প্রতিদিন এই সদরঘাট নদী বন্দর ব্যবহার করে রাজধানীতে আসছে দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষেরা। রয়েছে ফল, সবজি অন্যান্য নিত্যপণ্যর বৃহৎ পাইকারি বাজার ও আড়ৎ। পদ্মা সেতু থেকেও রাজধানীতে প্রবেশের একটি অন্যতম পথ হচ্ছে এই পুরান ঢাকা। এখান থেকে লাখো মানুষের প্রতিদিন যাতায়াত রাজধানীর নানা প্রান্তে।

উদ্বোধন হচ্ছে রাজধানীবাসীর স্বপ্নের মেগা প্রকল্প মেট্রোরেল। যেই মেট্রোরেল প্রকল্পের কারণে দিনের পর সড়কে দূর্ভোগ ও কষ্টের মধ্যে থাকতে হয়েছিল রাজধানীবাসীকে। এখন তার সুফল নেওয়ার সময়। কিন্তু কেনো সুফল পাবে না পুরান ঢাকার মানুষেরা।

মেট্রোরেল প্রকল্পে যুক্ত করে নেওয়া হোক পুরান ঢাকাকে। এই অঞ্চলের মানুষেরা স্বস্তি ও গতির সঙ্গে চলাচলে সুযোগ পেলে দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও অর্থনীতিতেও আসবে গতি। বদলে দেওয়ার এই পরিকল্পনা নেওয়া হোক দ্রুত।

মোঃ আশিকুজ্জামান আশিক
শিক্ষার্থী ও গণমাধ্যম কর্মী


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × 5 =


অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ

x