আন্দোলনে নামছে ‘চাকুরীতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদ’

- আপডেট সময় : ০৩:২০:৩০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৩ ১৮৪ বার পড়া হয়েছে

সরকারিসহ সব ধরনের চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে নতুন আহ্বায়ক কমিটি করে আন্দোলনে নামছেন একদল চাকরিপ্রত্যাশী।
দেশের বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত নতুন এই কমিটির নাম ‘চাকুরীতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদ’।
আগামী ২৮ জানুয়ারি ঢাকায় শিক্ষার্থী সমাবেশসহ সব জেলা,বিভাগী শহর ও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে এই সংগঠনটি।
বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় ও সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেন সংগঠনটির আহ্বায়ক মো. শরিফুল ইসলাম শুভ, যিনি এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুষদ ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন।
সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদ’ ও ‘চাকরিপ্রত্যাশী যুবপ্রজন্ম’ ব্যানারে আন্দোলন করে আসছেন অনেক চাকরিপ্রত্যাশী।
নতুন এই কমিটি তাদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে একই দাবিতে আন্দোলন করে যাবেন বলে জানান মো. শরিফুল ইসলাম শুভ।
তিনি বলেন, “আমাদের এই প্ল্যাটফর্মটি কোনো সংগঠনের নয়,এটি এদেশের চাকরিপ্রত্যাশী প্রত্যেকটি শিক্ষার্থীর। ইতোপূর্বে যারা এই দাবিতে আন্দোলন করেছে, আমরা তাদের দাবির সঙ্গে সংহতি জ্ঞাপন করছি। প্রয়োজনে তাদের নিয়ে আন্দোলনে যাব।”
ইতোমধ্যে ৪১ জেলায় আহ্বায়ক কমিটি গঠনের কথা জানিয়ে শুভ বলেন, শিগগিরই বাকি জেলাগুলোতে কমিটি গঠন করা হবে। আগামী ২৮ জানুয়ারি সারাদেশে কর্মসূচি পালন করবেন তারা, স্মারকলিপিও দেবেন সরকারকে।
বর্তমানে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ বছর, মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ক্ষেত্রে ৩২ বছর। এই সীমা বাড়ানোর দাবি বেশ কয়েক বছর ধরেই রয়েছে, যদিও সরকার তাতে সাড়া দেয়নি।
মহামারীর মধ্যে নিয়োগ বন্ধ থাকায় যারা ক্ষতির মুখে পড়েছে, তাদের জন্য দুই দফা সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ যাদের চাকরির বয়স শেষ হয়ে গিয়েছিল, সেবছর সেপ্টেম্বরেও তাদের সরকারি চাকরিতে আবেদনের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।
কিন্তু মহামারী প্রলম্বিত হতে থাকায় পরের বছর আরেক দফা সুযোগ দেওয়া হয়। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ যাদের বয়স ৩০ বছর হয়েছে, তারা ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকাশিতব্য সব সরকারি চাকরির বিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করার সুযোগ পান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বিশ্বের ১৬২টি দেশে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর, কোনো কোনো দেশে তা উন্মুক্ত। দক্ষিন এশিয়ার দেশেগুলোর মধ্যে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে বিভিন্ন রাজ্য ভেদে চাকরিতে আবেদনের বয়স সীমা ৩৫-৪৫ বছর, মালদ্বীপে ৪৫ বছর, শ্রীলঙ্কায় ৩৫ বছর, নেপালে ৩৫ বছর, এমনকি আফগানিস্তানেও ৩৫ বছর। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শুধু বাংলাদশে এবং পাকিস্তানেই চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩০ বছর।
বিসিএসে আবেদনের বয়সসীমা ৩০ বছর হলেও জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনে (বিজেএস) আবেদনের বয়সসীমা ৩২ বছর, সরকারি নার্সিংয়ে ৩৫ বছর এবং বেসরকারি স্কুল-কলেজে ৩৫ বছর, যা বৈষম্যমূলক বলে চাকরি প্রত্যাশীদের দাবি।
নিজেদের দাবির পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩২ বছর আগে ২৭ বছর থেকে ৩০ বছর করা হয়। ওখন বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু ছিল ৫৭ বছর। গড় আয়ু বেড়ে ৭৩ বছর হলেও চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বাড়ানো হয়নি।
সংবাদ সম্মেলন থেকে চাকরিতে আবেদন ফি সর্বোচ্চ ১০০ টাকা এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুষদে বঙ্গবন্ধুর নামে বঙ্গবন্ধু ল’ কমপ্লেক্স, বঙ্গবন্ধু চেয়ার এবং একটি ম্যুরাল স্থাপনের দাবি জানানো হয়।
পরিষদের সদস্য সচিব মোহাম্মদ রাসেলের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ সোহেল মিয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক মুক্তা সুলতানা, যুগ্ম আহ্বায়ক জহিরুল ইসলাম জনি, যুগ্ম আহ্বায়ক মোশাররফ পাঠান, সহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক সানাউল হক সনি ও খোকন মিয়া বক্তব্য দেন।