ঈশ্বরদীতে রিকশাচালক মামুন হোসেন (২৪) গুলিতে নিহত হওয়ার ঘটনায় পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন এবং তার ভাতিজা ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি হৃদয় হোসেনকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে এলাকাবাসী বিক্ষোভ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত করেছে।
শনিবার সকালে তীব্র শীতকে উপক্ষো করে এলাকার শত শত নারী-পুরুষ শৈলপাড়ায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধনে অংশগ্রহন করেন।
মানববন্ধন শেষে এলাকাবাসীরা মিছিল নিয়ে জাতীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নূরুজ্জামান বিশ্বাস ও পৌর মেয়র ইসাহক আলী মালিথার বাড়ির সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে কাউন্সিলরের মুক্তির দাবি জানায়।
বিক্ষোভ সমাবেশে এলাকাবাসীরা দাবি করে বলেন, পর পর দুইবারের নির্বাচিত কাউন্সিলর কামাল উদ্দিন বুধবার রাতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না। অনার্স পড়ুয়া ছাত্রলীগ নেতা হৃদয় হোসেনও হত্যার ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত নয়।উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে কামাল উদ্দিন ও হৃদয় হোসেনের নামে মামলা দায়ের এবং তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।এলাকায় কামালের জনপ্রিয়তা ও ভাবমূর্তি বিনষ্টের পাশাপাশি আওয়ামী রাজনীতি ধ্বংসের জন্য মিথ্যাভাবে তাদের ফাঁসানো হয়েছে।এই হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক প্রকৃত আসামীদের গ্রেফতার এবং নির্দোষীদের মুক্তির দাবি জানানো হয়।
কাউন্সিলর কামাল উদ্দিনের স্ত্রী শারমিন সুলতানা স্বপ্না, রেখা খাতুন, রীমা খাতুন প্রমূখ এসময় বক্তব্য রাখেন।
এবিষয়ে ঈশ্বরদী পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইসাহক আলী মালিথা বলেন, কাউন্সিলর কামাল উদ্দিন পর পর দুইবারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি।আমি শতভাগ নিশ্চিত হত্যাকান্ডের সাথে কামালের কোন সম্পৃক্ততা নেই এবং ঘটনার ধারে কাছে সে ছিলো না।কি উদ্দেশ্যে কেন যে তার নামে মামলা দায়ের এবং গ্রেফতার হলো তা আমার বোধগম্য নয়। সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত সত্য উদঘাটনের দাবি জানান তিনি।
প্রসংগত: ৪ জানুয়ারি রাতে শহরের পশ্চিম টেংরি কড়ইতলা এলাকায় ইঞ্জিনচালিত ভটভটির সঙ্গে এক লেগুনা চালকের গ্লাস ভাঙ্গা নিয়ে বিরোধের জের ধরে মামুন হোসেন (২৬) নামের এক রিকশাচালক গুলিতে নিহত হয়। রকি হোসেন ও সুমন হোসেন নামের আরও দুজন এসময় আহত হন। আহতরা রাজশাতী ও ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে নিহত মামুনের মা লিপি খাতুন এ ঘটনায় বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।মামলায় আটককৃত কাউন্সিলর কামাল উদ্দিনকে প্রধান করে তার ভাই আনোয়ার উদ্দিন, ভাতিজা হৃদয় হোসেন এবং ইব্রাহিমকে নামীয় এবং আরও ৩-৪ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
শুক্রবার বিকেলে র্যাব-১২ পাবনা ক্যাম্পে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মামলা হওয়ার পর র্যাব আসামিদের ধরতে অভিযানে নামে। শুক্রবার দুপুরে শহরের শৈলপাড়া এলাকা থেকে মামলার প্রধান আসামি কামাল উদ্দিন এবং হৃদয় হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।