আনিকা তাবাসসুম।নাটক, সিনেমা ও ওটিটিতে সাবলীল অভিনয় দিয়ে নিজের জায়গা শক্ত করছেন তিনি।অভিনয়শিল্পীর পাশাপাশি তিনি একজন সমাজকর্মী।সম্প্রতি নিজের কাজ নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।তার কিছু অংশ পাঠকদের জন্য হুবুহু তুলে ধরা হলো।
অভিনয় শুরুর জার্নিটা কেমন ছিলো?
স্কুল-কলেজের প্রোগ্রামগুলোতে আমি নাচ-নাটক করতাম।সেই জায়গা থেকে মানুষকে নতুন কাজ উপহার দেয়ার প্রবল আকাঙ্ক্ষা ছিলো।অভিনয়ের শুরুটা অনেক ভয়ানক এবং কঠিন ছিলো।ভাল কিছু কাজ করার ক্ষুধা আমাকে বার বার তাড়া করে।সেই জায়গা থেকে আমি অনেক অডিশন দিয়ে পরিচালকের কাছে নিজেকে প্রমাণ করার চেষ্টা করেছি।এটাতে সবচে বেশি সহযোগিতা করেছেন আমার মা-বাবা।বর্তমানে যারা অভিনয়ে ভালো করছেন তাদের দেখে কঠোর পরিশ্রম করছি।যতদিন বাঁচবো তাই করে যাবো।
এ পর্যন্ত কতগুলো নাটক, সিনেমা ও ওয়েবে কাজ করেছেন?
আমি প্রকৃতপক্ষে একজন সিনেমাপ্রেমী মানুষ।একটা সময় আমি আশিষ খন্দকারের সঙ্গে মঞ্চে কাজ করেছি।পর্দায় আমি প্রথম কাজ করেছি এখনকার বিখ্যাত পরিচালক রায়হান বাকির পরিচালনায় একটি শর্টফিল্মে।এরপর ১২টি টেলিভিশন ধারাবাহিকে কাজ করি।এর মধ্যে ‘কাজলরেখা’, ‘গরম মশল্লা’, ‘রুবি হত্যা’, ‘টুইন ভিলেজ’, ‘ফ্যামিলি প্রবলেম’ ইত্যাদি।নাটক করেছি ৪০টির মত। ‘গরম ভাতে মঞ্চ’, ‘রাতের কথা’, ‘স্বামী আব্দুল রহিম’, ‘জারনৌকোবিরা’ ‘অমানুষ’, ‘অবশেষণ’, ‘অক্সিজেন’, ‘কেউ কথা রাখেনি’ ইত্যাদি।‘প্রেম রং খান্দিনি রং’ ‘বরফ কলের গল্প’, ‘ব্যাচ ২০০৩’, ‘মালড়া’ ওয়েব ফিল্মেও কাজ করেছি।
অভিনয় ছাড়াও আপনি সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের নিয়ে কাজ করেন।এটার চিন্তাটা কীভাবে এলো, আর এটার কাজটা কীভাবে করেন?
করোনা মহামারির সময়ে সমগ্র বিশ্বে পড়াশুনার স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে।এরপর আমি ৫৫ জন শিক্ষার্থী নিয়ে উত্তরার বাউনিয়ায় বিদ্যাসভা স্থাপন করি।এর উদ্দেশ্য ছিলো সুবিধা বঞ্চিত পরিবারের বাচ্চাদের মানসম্মত ও গুনগত শিক্ষা প্রদান।এছাড়া এর একটি শাখা ময়মনসিংহ ও আরেকটি খুলনায়।আমাদের ভাসমান অবস্থায় ঢাকা শহরের কয়েকটি জায়গায় কাজ করছি।আমার ইচ্ছা সুবিধাবঞ্চিতদের শিক্ষার আলো দিয়ে সঠিক পথ দেখানো।বিষদভাবে বললে আমরা নানা ভকেশনাল ট্রেনিং, কারিকুলাম অ্যাক্টিভিটি, নৈতিকতা, প্রাথমিক শিক্ষার পাশাপাশি করে থাকি।
এই প্রতিষ্ঠানের ব্যয়ভার কীভাবে পরিচালিত হয়?
আমি একজন অভিনয়শিল্পী।মঞ্চ, নাটক, সিনেমাতে কাজ করে যে আয় হয় তা দিয়ে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ডাব্লিউবিএস-এ ব্যায় করি।যার মাধ্যমে বিদ্যাসভা নামে সুবিধাবঞ্চিতদের স্কুল পরিচালিত হচ্ছে।
বর্তমানে হাতে কি কি কাজ আছে?
সামনে ‘দাগি’, ‘ডেড সল’ ওয়েব ফিল্ম এবং ‘এ শহর আমার’ একটা সিনেমার সাইনিং করেছি।আশা করছি এ বছর আমার দর্শকের জন্য ভালো উপহার দিতে পারবো।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা?
আমি সৃজনশীল কাজ ও শিক্ষামূলক বিষয় উপস্থাপনের মাধ্যমে মানুষের মনে জায়গা করে নিতে চাই।আমি একজন শিল্পের মানুষ হতে চাই।মানুষের জন্য কাজ করতে চাই।এর জন্য আমি বিদ্যাসভা নামক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছি।বিদ্যাসভার মাধ্যমে প্রাথমিক ও হাতে কলমে শিক্ষা প্রদানের কাজ করি।এ বাচ্চাদের উন্নত বিশ্বেও গুণগত মানসম্মত শিক্ষার আওতায় নিয়ে আসতে চাই, যাতে এরা নিজেদের সুশিক্ষিত করে গড়ে তুলতে পারে।আমি কোন চরিত্রকে ছোট মনে করি না।