জীবন আর জীবিকার টানে সার্কাসের কমেডিয়ান চরিত্রের আড়ালে এই শহরে লুকিয়ে আছে অসংখ্য মানুষের চেহারা।বিচিত্র জগতে কতই না বিচিত্র মানুষের পেশা।তবে মানুষকে ক্ষনিকের বিনোদন আর আনন্দ দিতে নিজেকে উজার করা সেইসব মানুষের জীবনে নেই আনন্দ।ভালো নেই মাস্কার্টের আড়ালে থাকা মানুষ গুলো।
বিনোদনের সেই ফেরিওয়ালাদের একজন আব্দুল মজিদ (৫০)।হাস্য কৌতুক কখনোবা মানবিক বা বন্ধুত্ব।দেশের বিভিন্ন জেলায় মাসব্যাপী ভ্রাম্যমান সার্কাসে মানুষকে বিনোদন দিয়েই চলছে মজিদ এর জীবন।
মজিদ নীলফামারী জেলার জলডাঙ্গা উপজেলার খঁচিমাথা গ্রামের মৃত: মইমের ছেলে।প্রাপ্ত বয়স্ক হয়ে বুঝতে পাড়েন তিনি আর পাঁচজন মানুষের মতো স্বাভাবিক নয়।তার উচ্চতা প্রায় দু“ফিট।
প্রতিবেশীর চরম অবহেলা হতাশায় ফেলে মজিদ কে।পরে সে জীবিকা নির্বাহের জন্য বেছে নেয় সার্কাসের কমেডিয়ান চরিত্রটিকেই।নানা উৎসবেই মানষকে আনন্দ দিতে ডাক পরে তার।কিন্তু সেটাও নিয়মিত নয়।প্রচন্ড গরমে দিনভর ও গভির রাত পর্যন্ত অবয়বের আড়াল থাকা যেমন কষ্টকর সেই তুলনায় পারিশ্রমিক খুবি নগন্য।
সারা বছর তেমন কাজ না থাকায় নানা প্রতিকুলতা ঠেলে জীবিকা নির্বাহ করতে হয় তাদেরমত মানুষদের।আনন্দের ফেরিওয়লা এই মানুষদের নিরানন্দের জীবনের খবর রাখে ক”জন।
আব্দুল মজিদের দেখা মেলে পাবনা বেড়া ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলার দি গোল্ড স্টার সার্কাসের মাঠে।তিনি বলেন, দুই সন্তান ও স্ত্রী রয়েছে তার সংসারে।সামান্য এই আয়েই জীবিকা নির্বাহ করতে হয় তাকে।বছরজুড়েই অনেক কষ্টে দিন কাটান তারা।এ পর্যন্ত কোন সহযোগিতাও পায়নি তিনি।তাদের মত মানুষকে দেখারমত মানুষ এ সমাজে খুবই কম রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বছর কয়েক আগেও বিনোদন বলতে মানুষ বুঝতেন সার্কাসের খেলা, কৌতুক আর তাদের জোকারি।তখন আয় ভালোই ছিল।বর্তমানে সার্কাসের খেলার চল উঠেই গিয়েছে।শিল্পী সমিতিতেও তেমন একটা কদর নেই।একটা প্রাতিবন্ধী কার্ড আছে সেখান থেকে সামান্য কিছু টাকা পান, তা দিয়ে সংসার চলে না।মেয়ে ক্লাস টেনে পরে তার বয়স ১৬ বছর হয়েছে কিছুদিন পরে তার বিয়ে দিতে হবে অনেক খরচ লাগবে।ছেলেটার বয়স ১১ বছর, ওকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন।তাকে পড়লেখা করিয়ে ডাক্তার বানাতে চান।
আগে প্রতিদিন পারিশ্রমিক ছিল ২০০ থেকে ৩০০ টাকা।এখন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা।খাবার খেয়ে বাড়িতে তেমন কিছু পাঠাতেও পারেন না।
দি গোল্ড স্টার সার্কাসের পরিচালক আরিফ হোসেন বলেন, সারাদেশেই আমরা বিভিন্ন মেলায় সার্কাস খেলা পরিচালনা করি।সার্কাস চালু থাকলে তাদের তেমন একটা কষ্ট হওয়ার কথা নয়।
মেলায় ঘুরতে আসা দর্শনাথী বলেন, মজিদের মত হাজারো মজিদ রয়েছে এই শহরেই।তারাও এক ধরনের শিল্পী, তাদেরও মৃল্যায়ন করা উচিৎ।আমরা চাইলেই পারি তাদের সাথে স্বাভাবিক আচরন করতে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ নিহাল খান
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নিয়ম মেনে তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিবন্ধনের জন্য আবেদিত।